E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিআইজি মিজানকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

২০১৯ জুলাই ০১ ১৭:৪৮:০৯
ডিআইজি মিজানকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশের বিতর্কিত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য গেলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এসময় মিজানকে তাৎক্ষণিক হাইকোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেন আদালত।

এরপর তাকে পুলিশের রমনা জোনের ডিসির হাতে তুলে দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।

এসময় আদালত বলেন, মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়ে পুলিশ বিভাগের ইমেজ ধ্বংস করেছেন। যেটা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাম্য নয়।

এরপর আদালত তাকে গ্রেফতার ও মামলার অপর আসামি ডিআইজি মিজানের ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

আদালতে মিজানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী ও আমিনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম।

এর আগে দুদকের মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। জামিন আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টে উপস্থিত হন তিনি।

ডিআইজি মিজানের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান জানান, আগাম জামিন পেলে আবেদনকারী (মিজান) দেশ ত্যাগ করবেন না, আবেদনে এমন যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, ডিআইজি মিজানের জামিন আবেদন অনেকটা স্পর্শকাতর। রোববার সকালে ১৯ নম্বর কোর্টে যখন তার জামিন আবেদন দাখিল করা হয়, তখন আমরা সেখানে ছিলাম। পরে আদালত কাল বা পরশু শুনানি করতে পারেন বলে জানানো হয়। তবে তার জামিনের আগে দুদকের বক্তব্য শুনতে চান বলেও আদালত আমাকে জানিয়েছিল। অর্থাৎ আদালত বলেছেন, ‘ডিআইজি মিজানের জামিন আবেদনের বিষয়ে দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য না শুনে কোনো আদেশ দেব না।’

উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। পরে ২৫ জুন মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

অন্যদিকে মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ প্রশাসন। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। যদিও নারী নির্যাতন, ঘুষ প্রদান, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে দুই বছর ধরে মিজানুরের নাম আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test