E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বৃদ্ধার স্থগিত মামলা চালিয়ে হাইকোর্টে বিচারকের দুঃখ প্রকাশ

২০১৯ জুলাই ০৩ ১৫:৫৩:৫২
বৃদ্ধার স্থগিত মামলা চালিয়ে হাইকোর্টে বিচারকের দুঃখ প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার : হাইকোর্টের নির্দেশনায় স্থগিত করার পরও অশীতিপর রাবেয়া খাতুনের মামলার কার্যক্রম পরিচালানার বিষয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সাময়িক অব্যাহতি পেয়েছেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আল মামুন।

এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেওয়া ও বিস্তারিত শুনানির জন্য আগামী ১৭ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।

একই সঙ্গে মামলার সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী জুলহাস জীবিত নাকি মারা গেছেন -এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাহাবুদ্দিন মিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

আদালতে আজ বিচারকের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি আটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল।

শুনানিতে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, নিম্ন আদালতের প্র্যাকটিস পেশকার আদেশ লিখে দেন বিচারক স্বাক্ষর করেন। আমরা পেশকারকে শোকজ করব। তারপর এ বিষয়ে লিখিতভাবে আদালতকে জানাতে পারব।

তখন আদালত বিচারককে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা বিচার বিভাগের (জুডিশিয়ারির) অংশ। আপনাদের সুনাম মানে বিচার বিভাগের সুনাম, আর আপনাদের দুর্নাম মানে বিচার বিভাগের দুর্নাম।

এ পর্যায়ে বিচারক মো. আল মামুন এবং এপিপি শাহাবুদ্দিন মিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেন আদালত। এর আগে শতবর্ষী বৃদ্ধার পক্ষের আইনজীবী মো. আশলাফুল আলম নোবেল, রাবেয়া খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র আদালতে উপস্থাপন করেন।

এর আগে হাইকোর্টে স্থগিত থাকার পরও মামলা পরিচালনার কারণ ব্যাখ্যা করতে আজ (৩ জুলাই, বুধবার) সকাল সোয়া ১০টার দিকে হাইকোর্টে হাজির হন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারকক মো. আল মামুন। মামলার শুনানির পুরো সময় বিচারক ও ওই ট্রাইব্যুনালের এপিপি দাঁড়িয়ে ছিলেন।

আদেশের পর আবেদনকারী আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম নোবেল সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধার বিরুদ্ধে একটি মামলা হাইকোর্টের আদেশের স্থগিত করার পরও মামলা পরিচালনা করায় ওই বিচারককে তলব করেছিল আদালত। তলবে ঢাকা জজ কোর্টের ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ও এপিপি আজ (বুধবার) উপস্থিত হয়ে তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে সাময়িক অব্যাহতি পেয়েছেন। কিন্তু এ বিষয়ে আগামী ১৭ জুলাই লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সেদিন এ বিষয়ে শুনানির জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া আদালত আমাকে (আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম) বলেছিল, বৃদ্ধার বয়স কত তা জানানোর জন্য। সে অনুযায়ী রাবেয়া খাতুনের ন্যাশনাল আইডি আদালতে দাখিল করি। সেখানে তার জন্ম তারিখ ১৯৩৩ সাল। তবে বৃদ্ধার দাবি তার বয়স এখন ১০৪ বছর, এটি আমি আদালতকে জানিয়েছি। এছাড়া এ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলহাস জীবিত না মারা গেছেন এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেছিলেন। সেটির প্রতিবেদনও আদালতে দাখিল করা জন্য বলেছেন হাইকোর্ট।

গত ৩০ এপ্রিল এক আদেশে হাইকোর্ট ১৮ বছর আগে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় অশীতিপর রাবেয়া খাতুনের মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। মামলার নথি তলব করে বিচার বিলম্বের ব্যাখ্যা দুই সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়েছেন আদালত।

পরবর্তীতে গত ১৫ মে পরবর্তী আদেশে ২৬ জুন রাবেয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তার আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। এছাড়া এপিপিকে হাজির হতে বলেন। আদেশ অনুযায়ী আজ (বুধবার) আদালতে রাবেয়া এবং এপিপি সাহাব উদ্দিন মিয়া হাজির হন।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test