E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালেদের উপস্থিতিতে হবে গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানি

২০১৯ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৮:২৬:০৪
খালেদের উপস্থিতিতে হবে গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের আলোচিত সাংগঠনিক সম্পাদক (পরবর্তীতে বহিষ্কার) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মতিঝিল থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় রবিবার ‘ক্যাসিনো’ খালেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গুলশান থানায় দায়ের করা মাদক ও অস্ত্র মামলায় দশদিনের রিমান্ডে থাকায় এদিন তাকে আদালতে উপস্থিত করা যায়নি।

রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এমন আদেশ দেন। আদালতে মতিঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আজ (রবিবার) মতিঝিল থানায় করা মাদক মামলায় তার গ্রেফতার ও সাতদিনের রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু গুলশান থানার মাদক ও অস্ত্র মামলায় দশদিনের রিমান্ডে থাকায় আদালতে খালেদকে উপস্থিত করা হয়নি। এজন্য বিচারক তার উপস্থিতিতে গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। অর্থাৎ যেদিন খালেদকে আদালতে উপস্থিত করা হবে সেদিনই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় খালেদের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সফিকুল ইসলাম আকন্দ।

২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। আদালত আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে হাজতি পরোয়ানা ইস্যু করেন। ওইদিন তার উপস্থিতিতে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।

মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম আকন্দ আবেদনে উল্লেখ করেন, ‘মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশান থানার অস্ত্র মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে মতিঝিল থানার ৩১ (৯) ১৯ মামলায় সাতদিনের রিমান্ড আবেদনপূর্বক জানাইতেছি যে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে তার গুলশান বাসা তল্লাশি করে অস্ত্র, মাদক ও বিপুল পরিমাণ দেশি/বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তিনি জানান যে, মতিঝিলের ইস্টার্ন কমলাপুর কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের পঞ্চম তলার ৪০২ নম্বর রুমে ভূঁইয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটে ব্যবসার আড়ালে মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন করা হতো। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সাক্ষীদের সম্মুখে তার অফিসের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি চালান। তল্লাশিকালে তার অফিস থেকে ১৯০ পিস হালকা গোলাপি রঙের ইয়াবা, দেশি ও বিদেশি বিয়ার, সিসা, গাঁজা উদ্ধার করা হয়।’

‘মামলার প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, আসামির দখলে আরও বিপুল পরিমাণ সিসা, বিদেশি বিয়ার ও ইয়াবা ট্যাবলেট মজুদ আছ। তাকে পুলিশ হেফাজতে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও বিপুল পরিমাণ সিসা, বিদেশি বিয়ার ও ইয়াবা ট্যাবলেট এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ গ্রেফতার এবং উদ্ধারকৃত মাদকের উৎস সম্পর্কে তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গুলশান থানার অস্ত্র আইনের মামলা হতে মতিঝিল থানায় করা মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।’

২৭ সেপ্টেম্বর সাতদিনের রিমান্ড শেষে ‘ক্যাসিনো’ খালেদকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে র‌্যাব। রিমান্ডে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। এছাড়া গুলশান থানার অস্ত্র ও মাদক মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-৩ এর এএসপি বেলায়েত হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দিদারুল আলম অস্ত্র মামলায় পাঁচদিন ও মাদক মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় করা অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হয় যুবলীগ নেতা খালেদ হোসেন ভূঁইয়াকে। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় চারদিন এবং মাদক মামলায় তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর নিজ বাসা থেকে খালেদ মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, আটক খালেদকে র‌্যাব-৩ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে গুলশান ও মতিঝিল থানায় চার মামলা দায়ের করা হয়।

গ্রেফতারের সময় খালেদের বাসা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা, লকার থেকে ১০০০, ৫০০ ও ৫০ টাকার বেশ কয়েকটি বান্ডিল উদ্ধার করা হয়। সেগুলো গণনার পর ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া ডলারেরও বান্ডিল পাওয়া যায়। টাকায় তা ৫-৬ লাখ টাকা হবে বলে জানায় র‌্যাব। এছাড়া তার কাছ থেকে মোট তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। যার একটি লাইসেন্সবিহীন, অপর দুটি লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে রাখা হয়েছিল।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test