E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হত্যা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে খালেদ

২০১৯ অক্টোবর ২৩ ১৬:৪৪:০২
হত্যা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে খালেদ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ (বুধবার) তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় খিলগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পি‌বিআইয়ের তদন্ত চলাকা‌লেই খা‌লেদ‌কে এই মামলায় গ্রেফতার দেখা‌নো-পূর্বক রিমা‌ন্ডের আবেদন করা হয়। আদালত গ্রেফতার দেখানো-পূর্বক সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, খিলগাঁও এলাকার বা‌সিন্দা ইসরাইল হো‌সেন ও তার ছে‌লে সায়মন ২০১৪ সা‌লের ৪ সে‌প্টেম্বর রাজধানী মা‌নি এক্স‌চেঞ্জ থে‌কে ৩৮ লাখ টাকা তোলেন। প‌রে গা‌ড়ি‌তে ক‌রে রাত সা‌ড়ে ৮টার দি‌কে খিলগাঁও থানাধীন তরাগাছ এলাকায় গা‌ড়ি থে‌কে নাম‌লে তিন-চার ছিনতাইকারী তা‌দের গু‌লি ক‌রে টাকার দু‌টি ব্যাগ নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে যায়।

এ সময় গু‌লি‌বিদ্ধ বাবা-ছে‌লে‌কে স্থানীয় খিদমাহ হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যাওয়া হয়। ওই‌দিন সেখানেই সায়ম‌নের মৃত্যু হয়। পরে ইসরাইল‌কে রাজধানীর বক্ষব্যাধি হাসপাতা‌লে (পঙ্গু) নেয়া হয়। এই আঘা‌তের জে‌রেই তিনি ২০১৬ সা‌লে মারা যান।

এ ঘটনায় সায়ম‌নের চাচা ম‌জিবুর রহমান ২০১৪ সা‌লের ৫ সে‌প্টেম্বর বাদী হ‌য়ে খিলগাঁও থানায় দণ্ড‌বি‌ধির ৩০২, ৩৯৪ ও ৩৪ ধারায় এক‌টি মামলা ক‌রেন। ওই মামলার আসামি খালেদ।

এ মামলায় ২০১৬ সা‌লে ডি‌বি তদন্ত প্র‌তি‌বেদন দা‌খিল ক‌রে। ত‌বে আদালত প্রতি‌বেদন গ্রহণ না ক‌রে স্বপ্র‌ণো‌দিত হ‌য়ে পি‌বিআইকে ‌মামলার অ‌ধিকতর তদ‌ন্তের নি‌র্দেশ দেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডে কয়েক দফা রিমান্ডের পর কারাগারে ছিলেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে তার গুলশানের বাসা থেকে অস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাব। পরদিন তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর কয়েক দফা রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

খালেদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন এই যুবলীগ নেতা। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াংমেনস নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো বসে।

খিলগাঁও-শাহজাহানপুর হয়ে চলাচলকারী লেগুনা ও গণপরিবহন থেকে নিয়মিত টাকা দিতে হয় খালেদকে। প্রতি কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করেন। খিলগাঁও রেল ক্রসিংয়ে প্রতিদিন রাতে মাছের একটি হাট বসান এ নেতা। সেখান থেকে মাসে কমপক্ষে এক কোটি টাকা আদায় করেন। একইভাবে খিলগাঁও কাঁচাবাজারের সভাপতির পদটিও দীর্ঘদিন তিনি ধরে রেখেছেন। শাহজাহানপুরে রেলওয়ের জমি দখল করে দোকান ও ক্লাব নির্মাণ করেছেন।

৭ সংস্থার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ

জানা যায়, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, মুগদা এলাকার পুরো নিয়ন্ত্রণ এ নেতার হাতে। এসব এলাকায় থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যথাক্রমে রাজধানী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ (রাজউক), রেল ভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার ফকিরাপুল জোনসহ বেশিরভাগ সংস্থার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন এ নেতা। ‘ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া’ নামের প্রতিষ্ঠানটি দিয়ে তিনি তার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test