E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালেদার চিকিৎসা বিএসএমএমইউ হাসপাতালেই করা সম্ভব : হাইকোর্ট

২০২০ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৬:৫২:৫৭
খালেদার চিকিৎসা বিএসএমএমইউ হাসপাতালেই করা সম্ভব : হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশেই করা সম্ভব। তার চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালেই হবে।

আদালত আরও বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বুঝতে হবে উনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তিনি অন্য সাধারণ মানুষের মতো স্বাধীন নন। বিএসএমএমইউ দেশের মধ্যে সেরা হাসপাতাল। তাই সেখানে তার চিকিৎসা করতে কোনো সমস্যা নেই।

রাষ্ট্র, আসামি ও দুদকের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আবার হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন খালেদা। সে আবেদনে খালেদা জিয়ার ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ প্রয়োজন উল্লেখ করে তাকে দ্রুত বিদেশে তথা যুক্তরাজ্যের মতো দেশে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।

এই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট খালেদার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়ে আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে, খালেদা জিয়া ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ নেয়ার সম্মতি দিয়েছেন কি না, তিনি সম্মতি দিয়ে থাকলে তার সে ধরনের চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি না, আর সেই চিকিৎসা শুরু হয়ে থাকলে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত সর্বশেষ অবস্থা কী-এসব বিষয়ে প্রতিবেদন বিএসএমএমইউর উপাচার্যকে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এবং এই বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ২৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আসে। আজ রেজিস্ট্রার জেনারেল প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে বেঞ্চে পৌঁছে দেন। এরপর এ বিষয়ে শুনানি হয়।

শুনানির শুরুতেই আদালত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান। যেখানে বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের’ সম্মতি দেননি এবং অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য যে ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার দরকার হয়, সে ধরনের টেস্টের অনুমতিও তিনি দেননি। এছাড়া এই মেডিকেল প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে খালেদা জিয়ার ‘ব্যাকপেইনের’ কথা উল্লেখ রয়েছে।

একপর্যায়ে আদালত স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন পড়ার পর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন বিষয়ে আদেশ দিতে যান। তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড, আমরা আরেকটি সাপ্লিমেন্টারি আবেদন করব, সেটি শুনে আপনি রোববার আদেশ দিন।’

তখন আদালত বলেন, ‘না, রবিবার আদেশ দেয়ার তো কিছু নেই। চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছিলাম, বিএসএমএমইউ সে প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা রিপোর্টটি দেখলাম, এখন তো আর আদেশ দিতে সমস্যা নেই।’ তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘মাই লর্ড, রিপোর্টটা তো আমরা হাতে পাইনি। তাই আমাদের রিপোর্টটি দেয়া হোক এবং প্রয়োজন আজ দুপুর দুইটায় আদেশ দিন। আমরা আরেকটি সাপ্লিমেন্টারি আবেদন তখন নিয়ে আসব।’ এরপর আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য দুপুর দুইটার সময় নির্ধারণ করেন।

এরপর দুপুর দুইটায় আবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী মানবিকভাবে জামিন আবেদন প্রার্থনা করেন। সেই সঙ্গে তিনি ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত কিছু তথ্য তুলে ধরে পড়ে শোনান। তিনি বলেন যে, খালেদা জিয়া যে ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন তার চিকিৎসা এখানে দিতে ঝুঁকি আছে বলেই চিকিৎসকরা বারবার সম্মতির প্রশ্ন তুলছেন।

এ সকল বক্তব্য শোনার পর আদালত বলেন, ‘জামিন আবেদন শুনে আমরা নতুন কোনো গ্রাউন্ড পাইনি। আর খালেদা জিয়া একজন দণ্ডিত ব্যক্তি। তাই একজন সাধারণ ব্যক্তি যেভাবে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার তা তিনি পাবেন না। তিনি শুধু কারাবিধি (জেল কোড) অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন। সে জন্যই তাকে এখন দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’

“তবে, তিনি যদি সম্মতি দেন তাহলে তার ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ শুরু করতে হবে। আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড যদি মনে করেন যে, আরও চিকিৎসক যুক্ত করা প্রয়োজন, তাহলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় আরও চিকিৎসক যুক্ত করতে পারবেন।”

এরপর আদালত বলেন, আমরা জামিন আবেদনটি খারিজ করছি।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test