E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জোবায়ের মনিরের জামিন বাতিল, কারাগারে পাঠানোর আদেশ

২০২০ আগস্ট ০৯ ১৪:০৯:২৯
জোবায়ের মনিরের জামিন বাতিল, কারাগারে পাঠানোর আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় সুনামগঞ্জের শাল্লার জোবায়ের মনিরের জামিন বাতিল করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জামিন নেয়ার পর শর্ত ভঙ্গ করে সুনামগঞ্জে নৌবিহারে গিয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন- এমন অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার (৯ আগস্ট) এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে অসুস্থতা দেখিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জোবায়ের মনির। কিন্তু জামিনের শর্ত ভেঙে গোপনে নিজ এলাকায় নৌবিহারে ঘোরেন। তাই তার জামিন বাতিল চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

জানা গেছে, জোবায়ের ঈদের আগের দিন গ্রামের বাড়ি শাল্লা উপজেলার দৌলতপুরে গিয়ে পশু কোরবানিতে অংশ নেন। পরে নিজস্ব লোকজন নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সোমবার (৩ আগস্ট) ঢাকায় ফিরেন। এ ঘটনায় মামলার বাদী, সাক্ষী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজন আতঙ্কে আছেন। এলাকায় একক প্রভাবশালী হিসেবে এখনও প্রতিষ্ঠিত জোবায়ের মনিরের পরিবার। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজন সবসময়ই তটস্থ থাকেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে জোবায়ের মনির, তার ভাই প্রদীপ মনির ও চাচা মুকিত মনিরসহ অপরাধে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ জমা দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ মার্চ অভিযোগের তদন্ত শুরু করে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পেরুয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রজনী দাসের দায়েরকৃত মামলায় ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জোবায়ের মনির, জাকির হোসেন, তোতা মিয়া টেইলার, সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুল জলিল, আব্দুর রশিদসহ অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ দায়েরের পরই আমেরিকায় পালিয়ে যায় অভিযুক্ত মুকিত মনির।

২০১৯ সালের ১৭ জুন তদন্ত সংস্থা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জোবায়ের মনিরসহ ১১ জন জড়িত বলে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করে। গত ফেব্রুয়ারিতে আদালতকে অসুস্থতার তথ্য দিয়ে জোবায়ের মনির জামিন মঞ্জুর করিয়ে নেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর হাওরাঞ্চলের শীর্ষ দালাল আব্দুল খালেকের নির্দেশে পেরুয়া, উজানগাঁও, শ্যামারচরে ভয়াবহ গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। শ্যামারচর বাজারের স্কুলের সামনে ২৭ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে লাইন ধরিয়ে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়।

পরে কয়েকটি পল্লীতে প্রায় তিন শতাধিক প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী দিয়ে নারীদের ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। ওই গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয় দালাল আব্দুল খালেকের ভাই মুকিত মনির, কদর আলী, ছেলে প্রদীপ মনির, জোবায়ের মনিরসহ প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী। ১৯৭২ সালে কদর আলীকে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয়।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test