E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রত্নাকে গাড়িচাপা দিয়ে লোকজনের ভয়ে পালিয়ে যাই : মাইক্রোচালক

২০২০ আগস্ট ৩০ ২১:০৮:৪৯
রত্নাকে গাড়িচাপা দিয়ে লোকজনের ভয়ে পালিয়ে যাই : মাইক্রোচালক

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোডে সাইক্লিং করার সময় পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নাকে পাশ থেকে ধাক্কা মারেন মাইক্রোবাস চালক এস এম দারুস সালাম। ধাক্কা মারার পর লোকজনের ভয়ে সে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান তিনি। এরপর শুনতে পান তার গাড়ির ধাক্কায় মারা গেছেন তরুণ অভিযাত্রী রেশমা নাহার রত্না।

রবিবার (৩০ আগস্ট) ঘটনার দায় স্বীকার করে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাস চালক এস এম দারুস সালাম। জবানবন্দিতে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন দুই দিনের রিমান্ড শেষ তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। চালক ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বেচ্চায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক এস এম মোবারক হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অপরদিকে চালক দারুস সালামের আইনজীবী ইমরুল হাসান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বিচারক তার জামিন শুনানির জন্য সোমবার (৩১ আগস্ট) দিন ধার্য করেন।

জবানবন্দিতে মাইক্রোবাস চালক এস এম দারুস সালাম বলেন, আমি রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোডে দিয়ে মাইক্রোবাস চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় রেশমা নাহার রত্নার সাইকেলে আমার মাইক্রোবাসের ধাক্কা লাগে। ধাক্কা মারার পর আমি লোকজনের ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যাই। এরপর আমি শুনতে পাই আমার মাইক্রোবাসে ধাক্কা লাগা তরুণী মারা গেছেন।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৬ আগস্ট রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় একটি টয়োটা মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়। এই গাড়ি মালিকও তিনি।

এই মামলায় মো. নাঈম নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সময় ১২ সিটের একটি কালো রঙের হাইস মাইক্রোবাসও জব্দ করে পুলিশ। নাঈমকেও আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল।

পুলিশ বলছে, রিমান্ড শেষে নাঈম ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। সিসিটিভি ফুটেজে নাঈমের গাড়ি ও দারুস সালামের গাড়ি পাশাপাশি দেখা গেছে। তাই তাকেও গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

গত ১৮ আগস্ট নাঈমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ জানিয়েছিল, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকার প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য তিনটি পৃথক টিম গঠন করা হয়। কালো মাইক্রোবাসটির সম্ভাব্য যাত্রাপথ ধরে মাইক্রোবাসটির অবস্থান শনাক্তে কাজ শুরু করা হয়।

প্রাথমিকভাবে মূল সড়ক, অন্যান্য সড়ক, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক স্থাপনার প্রবেশপথে থাকা ৩৮২টি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে ঘটনার কিছু সময় পূর্ব ও পরে মাইক্রোবাসটির যাত্রাপথ শনাক্তে সক্ষম হয় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। এসব ফুটেজ সংগ্রহ করে মাইক্রোবাসটির বেশকিছু অস্পষ্ট ডিজিটাল নম্বর প্লেটের ছবি পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত নম্বরগুলো কিছুটা স্পষ্টীকরণপূর্বক প্রাথমিকভাবে ১১২টি মাইক্রোবাসের বিষয়ে কাজ শুরু হয়। চারটি আলাদা টিম গঠন করে বিআরটিএসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এসব মাইক্রোবাসের মালিকানা, রঙ, সিটের সংখ্যা ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোডে সাইক্লিং করার সময় গাড়ির ধাক্কায় মারা যান তরুণ অভিযাত্রী রেশমা নাহার রত্না।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ৩০, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test