E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দন্ড কার্যকরের অপেক্ষা

২০১৪ আগস্ট ১৭ ১২:১৩:২১
দন্ড কার্যকরের অপেক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ফাঁসির দ- পেয়েছেন এক বছরেরও বেশি সময় আগে। কিন্তু দ- কার্যকর হবে কি না তা জানা যায়নি এখনো। কারণ তার আপিল শুনানি শেষ হয়নি।

একইভাবে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আবদুল আলীমের পরিণতি জানা যায়নি আপিল শুনানি শেষ না হওয়ার কারণে। আপিল বিভাগের রায়ের পর জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার দ- কার্যকর হয়েছে আর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল শুনানি শেষে রায়ের অপেক্ষায় আছে গোটা দেশ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখন পর্যন্ত মৃত্যুদ- দিয়েছে ছয়জনের এবং একজনের যাবজ্জীবন, একজনের আমৃত্যু কারাদ- ও একজনের নব্বই বছরের কারাদ- দিয়েছে।

সব মামলাতেই আপিল করেছে আসামিপক্ষ। কোনো কোনোটি আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন দ-ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর দ- বাড়িয়ে ফাঁসির আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ের পর গত ১২ ডিসেম্বর তা কার্যকরও হয়।

অন্যদিকে মৃত্যুদ-ের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিল শুনানি শুরু হলেও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়নি এখনো।

একইভাবে গোলাম আযমের ৯০ বছরের এবং আবদুল আলীমের আমৃত্যু কারাদ-ের মামলারও শুনানি শুরু হয়নি। আর ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সাবেক জামায়াত নেতা পলাতক আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের পক্ষে কোনো আবেদন হয়নি আপিল বিভাগে।

একইভাবে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চৌধুরী মঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খানের পক্ষে কেউ আবেদন করেনি আপিল বিভাগে।

শুনানি চলছে যে মামলায়

গত ৫ জুন বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে কামারুজ্জামানের মামলার শুনানি শুরু হয়। তবে সাঈদীর মামলা রাজ্জাক শুরু করলেও পরে এস এম শাহজাহান নামে অন্য এক আইনজীবীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে দেশের বাইরে গিয়ে আর ফেরেননি রাজ্জাক। এরপর শাহজাহান ও খন্দকার মাহবুব ওই মামলা শেষ করেন।

কামারুজ্জামানের মামলায় ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলামকে শুনানির অনুমতি দিতে আবেদন করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টে অনুমতিপ্রাপ্ত হিসেবে ট্রাইব্যুনালে তিনি শুনানি করলেও আপিল বিভাগে শুনানির অনুমতি নেই।

যুদ্ধাপরাধের মামলার আপিলে এবারই প্রথম প্রধান বিচারপতি থাকছেন না। এই বেঞ্চে বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে রয়েছেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।

একাত্তরে ময়মনসিংহ জেলা শাখার আল বদর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কামারুজ্জামানকে গত বছর ৯ মে মৃত্যুদ- দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৬ জুন আপিল করেন কামারুজ্জামান। তবে সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হওয়ায় আপিল করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই বছর সংশোধিত যুদ্ধাপরাধ আইনে আপিল শুনানির জন্য ৬০ দিন বেঁধে দেওয়া হয়। তবে এই সময়সীমা উচ্চ আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা। তারা বলছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে উচ্চ আদালত একটি মামলা যতদিন দরকার ততদিন শুনতে পারেন।

২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যার মাধ্যমে বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের মৃত্যুদ-ের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধ মামলায় রায় শুরু হয়।

জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম, আবদুস সুবহান, মীর কাসেম আলী, বিএনপি নেতা ফরিদপুরের নগরকান্দার আবু জাহিদ, জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক আলীর মামলা চলছে ট্রাইব্যুনালে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে আসছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজ বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চাইছি যাতে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে অনেক মামলা থাকায় বিষয়টি নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি আমাদের দেশে প্রথম শুরু হয়েছে, সেজন্য মামলাগুলো পরিচালনায় সময় লাগছে। এটা বাস্তবতার কারণেই হচ্ছে।’

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test