E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা রিমান্ডে

২০২০ নভেম্বর ১৫ ১৭:৪৯:১৩
মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার : সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় গ্রেফতার মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা খাতুনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (১৫ নভেম্বর) তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকি বিল্লাহ ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতকে ফাতেমা খাতুনের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি অবহিত করেন তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। এ সময় ফাতেমা খাতুনকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করলে ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে হাজতি পরোয়ানা ইস্যু করা হবে বলে বিচারক আদেশ দেন।

আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ফাতেমা খাতুনকে গ্রেফতারের পর ১২ নভেম্বর আদাবর থানায় আনা হয়। আগে থেকে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। থানা হেফাজতে থাকাকালীন ১৩ নভেম্বর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেয়া হয়। অধ্যাপক ডা. গোলাম আজমের অধীনে চিকিৎসাধীন তিনি।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

তারা হলেন- হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।

এএসপি শিপনকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গত সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় মানসিক সমস্যার কারণে হাসপাতালে আসেন এএসপি আনিসুল করিম। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মারা যান তিনি। হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মাধ্যমে।

দীর্ঘক্ষণ অচেতন থাকা অবস্থায়ও তাকে ভর্তি কার্যক্রম করা হয়নি। কিছুক্ষণ পর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের লোকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যু (ব্রট ডেথ) হয় শিপনের।

এ ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা একটি মামলা করা হয়। মঙ্গলবার আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর ৯।

হাসপাতালটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকালে আনিসুল করিম শিপন হাসপাতালে ঢোকার পরই ৬-৭ জন তাকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। ৪ মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন শিপন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন।

আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test