E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোটরসাইকেল চালককে হত্যার ১০ বছর পর ৩ জনের ফাঁসির রায় 

২০২৩ আগস্ট ২৮ ১৬:৫৭:০৬
মোটরসাইকেল চালককে হত্যার ১০ বছর পর ৩ জনের ফাঁসির রায় 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুরে মোটরসাইকেল চালক শাহাদাত ঘরামীকে (১৮) হত্যা মামলার দশ বছর পর ৩ জন আসামীকে ফাসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে আসামীরা পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

সোমবার (২৮ আগষ্ট) দুপুরে মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার রামনগর এলাকার সুলতান শরিফের ছেলে সেন্টু শরীফ (৩৫), কমলাপুর এলাকার মান্নান ফকিরের ছেলে মিরাজ ফকির (৩০) ও মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুরের মৃত জিন্নাত শেখের ছেলে ফজেল শেখ (৫০)।

আদালত, মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বড় দুলালী এলাকার মোকসেদ ঘরামীর ছেলে শাহাদাত ঘরামী ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করতেন।

গত ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশি মিরাজ ও সেন্টু সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বরিশালের বার্থী যাওয়ার কথা বলে শাহাদাত ঘরামীকে ভাড়ায় নেন। তারা মোটরসাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। এক পর্যায় মোটরসাইকেলটি নেয়ার জন্য শাহাদাতকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তাদের আত্মীয় ফজেল শেখের মাধ্যমে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সিকি-নওহাটা এলাকার একটি জমিতে ফেলে তারা দ্রুত চলে যান। এ ঘটনায় দুদিন পর নিহতের বাবা মোকসেদ ঘরামী বাদী হয়ে মিরাজ ফকির ও সেন্টু শরীফসহ অজ্ঞাতনামা আরো বেশ কয়েকজনকে আসামী করে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

ঐ সময়ের মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শ্যামলেন্দু ঘোষ তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১০ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। দশ বছর যুক্তিতর্ক শেষে স্বাক্ষী প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ৩ জন আসামীকে মৃত্যুদ- ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- দেয়া হয়। তবে আসামীরা পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

মামলার বাদী মোকসেদ ঘরামী বলেন, আমার ছেলে একজনের কাছ থেকে প্রতিদিন আড়াইশো টাকা ভাড়া দেয়ার চুক্তিতে মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিলো। সেন্টু, মিরাজ আর ফজেল মোটরসাইকেল নেয়ার জন্য আমার ছেলেকে হত্যা করেছেন। শুধুমাত্র একটি মোটরসাইকেলের জন্য আমার ছেলেকে এভাবে মেরে ফেললো, তা খুবই কষ্টকর। আজ আদালত ওদের ফাসির রায় দিয়েছেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। তবে একটাই দাবী, এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। যাতে করে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পায়।

নিহতের মা জহুরা বেগম বলেন, একটা মোটরসাইকেলের জন্য আমার ছেলেকে ওরা মেরে ফেলেছে। আজ আমি আমার ছেলে হত্যার রায় পেয়েছি। মরার আগে অন্তত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই। তাহলে কিছুটা হলেও শান্তি পাবো।

মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, একটি গরীব পরিবারের সন্তানের ভাড়ায় চালানো মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে এ ঘটনা ঘটায় আসামীরা। এদের মধ্য থেকে আসামী মিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সে আদালতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। পরে সে জামিন নেয়ার পর থেকে পলাতক আছেন। দীর্ঘ দশ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই মামলার ৩ জন অভিযুক্তকে ফাসির আদেশ দেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।

(এএসএ/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test