E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার’ পদে সুপারিশ করতে রুল 

২০২৪ মার্চ ২০ ১৬:১৪:০৬
‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার’ পদে সুপারিশ করতে রুল 

স্টাফ রিপোর্টার : ৪১তম বিসিএসে অপেক্ষমাণ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্যে থেকে ১৯৫টি ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার’ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।‌ 

বুধবার (২০ মার্চ ) এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। সংশ্লিষ্টদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির (পল্লব)। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার ও ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার। রুলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির (পল্লব)।‌

এর আগে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ৪১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থী, সানজানা কবীর ঈশা, মো: তারেকুর রহমানসহ ১৯০ জনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।

এরআগে ১৪ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, কমিশনের সচিব এবং পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির (পল্লব) ৪১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থী, সানজানা কবীর ঈশা, মো: তারেকুর রহমানসহ ১৯০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করতে নোটিশটি ই-মেইলে পাঠান। নোটিশে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নন ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির পদ ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার’’ পদে সুপারিশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

রিটে বলা হয়েছে, ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই বিসিএসে সর্বমোট ১২হাজার ৩৪১ জন পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্যপদে ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ৯ হাজার ৮২১ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদের সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে বঞ্চিত এসব নন ক্যাডার প্রার্থীদের পিএসসি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে চাহিদার ভিত্তিতে সুপারিশ করে থাকে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের ২৫ জুন ৪১তম বিসিএস নন ক্যাডার থেকে ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার' (১০তম গ্রেড)’-এর ১৯৫টি পদে সুপারিশের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানায়। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উক্ত পদগুলোতে সুপারিশ করতে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনকে অনুরোধ জানায়। কিন্তু পিএসসি উক্ত পদে ৪১তম বিসিএস নন ক্যাডার থেকে সুপারিশ করেনি। অথচ উক্ত ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার' পদে সুপারিশ পেতে নোটিশদাতাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু উক্ত পদগুলোতে তাদের সুপারিশ করা হয় নি।

এতে আরো বলা হয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর (গেজেটেড এবং নন গেজেটেড কর্মকর্তা) নিয়োগ বিধিমালা ২০১৩, (সংশোধিত বিধিমালা, ২০২০) মতে,উক্ত ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার' পদে নিয়োগ পেতে হলে একজন প্রার্থীকে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি কোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে কম্পিউটার চালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। নোটিশদাতাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি বিধিতে উল্লিখিত কম্পিউটার চালনায় প্রশিক্ষণ থাকাসত্ত্বেও পিএসসি তাদেরকে উক্ত পদে সুপারিশ করেনি যা আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় এবং ন্যায়বিচার বহির্ভূত। অথচ উক্ত বিধি পাশ হওয়ার আরো পরে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ, ৩৮ তম বিসিএস নন ক্যাডার প্রার্থীদের উক্ত পদে সাধারণভাবে সুপারিশ ও নিয়োগ দেয়া হয়। এর দ্বারা বর্তমান নোটিশদাতাদের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়েছে মর্মে অত্র আইনি নোটিশে দাবী করা হয়।

রিটে আরও বলা হয়েছে, ‘নন ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০, সংশোধিত ‘বিধিমালা ২০১৪’ অনুযায়ী ৪১তম বিসিএস নন ক্যাডার সুপারিশের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা ওসব পদে সুপারিশ ও নিয়োগ পেতে আইনগতভাবে উপযুক্ত।

জানা গেছে, ১৯০ জন নন-ক্যাডার প্রার্থী পিএসসির নির্দেশনা মোতাবেক উক্ত ১৯৫ টি ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার' নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু অদ্যাবধি তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়নি, যা আইন বিরোধী এবং ন্যায়বিচার পরিপন্থি। কর্ম কমিশনের দায়িত্ব হলো সরকারের চাহিদা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক এবং যোগ্য প্রার্থীদের বিভিন্ন ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার পদে সুপারিশ করা। যেহেতু সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে শূন্যপদের বিপরীতে চাহিদা পত্র প্রেরণ করে ওই পদগুলো নিয়োগের জন্য চাওয়া হয়েছে, সেহেতু পিএসসির দায়িত্ব হলো ওই পদে নিয়োগের সুপারিশ করা।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, ৪১তম বিসিএস নন ক্যাডার অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে ওই ১৯০ জনকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার' পদে নিয়োগের সুপারিশ করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার ১৯০ জনের পক্ষে রিট দায়ের করা হয়। আজ শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। আশা করছি বিবাদীরা যথাসময়ে রুলের জবাব দিবেন।

(এসটি/এসপি/মার্চ ২০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test