E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেয়র আরিফুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর

২০১৫ জানুয়ারি ১৮ ১৪:৩২:১২
মেয়র আরিফুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : আরিফুল হক চৌধুরী। ফাইল ছবিসিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র ও বিএনপির নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আরিফুলের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আজ রবিবার হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি নিয়ে আরিফুলের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক শফিকুল ইসলাম।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ আমলি আদালত-১-এ আত্মসমর্পণের পর জামিনের আবেদন করেছিলেন কিবরিয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আরিফুল। শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পরপরই তাঁকে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থায় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

একই মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ হবিগঞ্জের আমলি আদালত-১-এ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আরিফুল ও গউছকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

আরিফুলের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির নেতা আরিফুল হক চৌধুরীসহ নতুন করে নয়জনকে অভিযুক্ত করে তৃতীয় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আরিফুল আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। কারাগারে আটক থাকায় তাঁর দ্বারা মেয়রের ক্ষমতা প্রয়োগ জনস্বার্থে পরিপন্থী। সে জন্য তাঁকে সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯-এর ১২ (১) ধারার বিধানে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডে গত ১৩ নভেম্বর আদালতে তৃতীয় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুননেসা পারুল। এতে আরিফুল হক, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছসহ নয়জনকে নতুন করে অভিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৫ জনে দাঁড়ায়।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যেরবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। একই ঘটনায় আরও নিহত হন স্থানীয় আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী। আহত হন ৭০ জন। এ ঘটনার পরদিন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক) ও সাংসদ আবদুল মজিদ খান হবিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।

তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডের ৫০ দিন পর ২০০৫ সালের ২০ মার্চ প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান। এতে আসামি করা হয় ১০ জনকে। তাঁরা হলেন শহীদ জিয়া শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল কাইয়ুম, ব্র্যাক ব্যাংকের স্থানীয় কর্মকর্তা আয়াত আলী, সাইনবোর্ড লেখক কাজল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সহদপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, স্কুলশিক্ষক শাহেদ আলী, তাজুল ইসলাম, একই এলাকার জয়নাল আবেদীন জালাল, লস্করপুর বিএনপির নেতা জমির আলী, ডাকপিয়ন জয়নাল আবেদীন মোমিন ও ছাত্রদলের কর্মী মহিবুর রহমান।

২০১১ সালের ২০ জুন দ্বিতীয় দফায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম। এতে নতুন করে আসামি করা হয় ১৬ জনকে। একই সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সম্পৃক্ততা খুঁজে পান তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে নতুন করে যাঁদের আসামি করা হয় তাঁরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হুজি নেতা মুফতি হান্নান, মাওলানা তাজউদ্দিন, মুফতি সফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, আবু জান্দাল, মহিব উল্লাহ, শরীফ সাহেদুল আলম, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ, বদরুল আলম মিজান, মিজানুর রহমান, আবুল মাজেদ বাট, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আলী, হাসান উল্লাহ ও ইউসুফ বিন শরীফ।

প্রথম ও দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি করেন কিবরিয়ার পরিবার ও বাদী। তাঁদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিবরিয়ার পরিবার ও সেই সময়কার হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এমদাদুল হকের সঙ্গে কথা বলা, মূল পরিকল্পনাকারী শনাক্ত করা, মদদদাতা ও আশ্রয়দাতা এবং গ্রেনেডের উৎস বের করাসহ পাঁচটি নির্দেশনা দিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন সিআইডিকে।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ১৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test