E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গণশুনানিতেও র‌্যাবকে দোষারোপ

২০১৪ মে ১৩ ১৫:১৭:৩৩
গণশুনানিতেও র‌্যাবকে দোষারোপ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : সাত খুনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জে গণশুনানি শুরু করেছে। প্রথম দিন ৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা নূর হোসেন ও র‌্যাবকে অভিযুক্ত করে কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেন। নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা খুনিদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য না নিতে তদন্ত কমিটির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

সাক্ষ্য প্রদানের জন্য শতাধিক ব্যক্তি নাম অন্তর্ভুক্ত করলেও গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত গণ শুনানিতে মাত্র ৬ জন সাক্ষ্য দেন। এদের মধ্যে একজন নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। অন্যরা শুনানিতে অংশ নিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষ কোন বিষয় জানাতে না পারলেও ঘটনায় পলাতক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাব থেকে চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে তাদের বিচার দাবি করেন।

এদিকে গণশুনানি চলাকালে নিহত নজরুল ইসলামের ভাই আবদুস সালাম তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, এভাবে ডিসি অফিসে বা সার্কিট অফিসে এসে লোকজন সাক্ষ্য দিতে ভয় পায়। কারণ এখানে অনেক মিডিয়াসহ লোকজনের নজর থাকায় অনেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী থাকলেও আসেনি। তাই তদন্ত কমিটির উচিত গোপনে সাক্ষ্য নেয়া।

গতকাল সাক্ষ্য দিয়েছেন ফতুল্লার মাসদাইরের মুজিবুল হকের ছেলে জালালউদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জের আজিবপুরের আব্দুল হামিদের ছেলে মো. নূর হোসেন মুন্না, আবুল কাশেম, কাঁচপুর এলাকার গিয়াসউদ্দিনের ছেলে জেলা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত আব্দুলল্লাহ রাসেল, মজিবুর রহমান ও শাহীন আজাদ।

জালালউদ্দিন সাক্ষ্য দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপের পাশে বসে প্রস্রাব করছিলেন। ওই সময় তিনি দেখতে পান, র্যাবের একটি গাড়ি ও একটি কালো রঙের ১২ থেকে ১৩ সিটের মাইক্রোবাস আগে থেকে অবস্থান করছিল। ওই সময় তারা দুইটি প্রাইভেটকার আটক করে। সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকারে ছিল প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জন ও নীল রঙের প্রাইভেটকারে ছিল আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ি চালক।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা ওই প্রাইভেটকার দুইটি থেকে তাদের নামিয়ে ওই মাইক্রোবাসে উঠিয়ে স্প্রে ছিটিয়ে দিলে এক মিনিটের মধ্যেই তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মাইক্রোবাসটি ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় স্টেডিয়াম সংলগ্ন তক্কার মাঠের বিপরীতে লামাপাড়া মার্কাস মসজিদের সামনের সড়ক দিয়ে চলে যায়। ঘটনার সময় লিংক রোডের অপর প্রান্তে একটি প্রাইভেটকারে ছিল নূর হোসেন।

জেলা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ রাসেল বলেন, নূর হোসেন ও র‌্যাব জড়িত থাকার বিষয়টি পানির মতো পরিষ্কার। নূর হোসেন ছিল অর্থের জোগানদাতা। ৬ কোটি টাকার ভাগ অনেকেই পেয়েছে। নূর হোসেন বাহিনীর নামে ১২টি অস্ত্রের লাইসেন্স নিলেও ২০/২৫টি বেনামে অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছিল। শাহীন আজাদ বলেন, হোসেন চেয়ারম্যান (নূর হোসেন) একা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেনি। সহযোগিতায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও র‌্যাব জড়িত ছিল। র‌্যাবের ওই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

খুনীদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য না নিতে আইনজীবীদের অনুরোধ

হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির সাথে দেখা করে খুনীদের পক্ষে কোন সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা। আগামী ১৫ মে গণ শুনানিতে তারা অংশ নেবেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেছেন আইনজীবীরা। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, 'আমরা কর্মবিরতি পালন করেছি। এরপর তদন্ত কমিটির সাথে দেখা করে খুনীদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য না নিতে মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছি।'

(ওএস/এটি/মে ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test