E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এসিড নিক্ষেপ মামলায় ১ জনের ফাঁসি ও ২ জনের যাবজ্জীবন

২০১৫ এপ্রিল ২২ ১৪:৩৬:১৯
এসিড নিক্ষেপ মামলায় ১ জনের ফাঁসি ও ২ জনের যাবজ্জীবন

রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরে স্কুলছাত্রী মাসুদা আক্তার মনির শরীরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আড়াই বছর পর রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ঘটনার মূলহোতা আরিফুল ইসলামের ফাঁসি ও তার সহযোগী আলাল এবং দুলালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় খালাস পেয়েছেন মামলার অপর দুই আসামি আরিফিন ও সাদ্দাম।

গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিকেই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। পৌনে ১২টায় বিচারক এজলাস কক্ষে উপস্থিত হয়ে সাড়ে ১২টায় রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মনি ও তার পরিবারের লোকজনসহ বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মকবুল হোসেন ও আদালত সূত্র জানায়, নগরীর বাবুখাঁ এলাকার মৃত মহুবুল হোসেনের মেয়ে ও সমাজ কল্যাণ বিদ্যাবীথি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী মাসুদা আক্তার মনিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো তারই প্রতিবেশি আনোয়ার হোসেনের ছেলে আরিফুল (২২) ও এজাজুলের ছেলে আলাল (২২) এবং দুলাল (২৪)।

কিন্তু, মনি সবসময়ই তাদের প্রেম নিবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। ঘটনার দিন ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট মনি ও তার মা রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে আগে থেকে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা আরিফুল, আলাল ও দুলাল ঘরের জানালা দিয়ে ঘুমন্ত মনির মুখের ওপর এসিড ছুড়ে মারে। এতে মনির মুখ, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। এসময় মেয়ের চিৎকারে মা সোলেকা পারভিন ঘর থেকে বেরিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করতে গেলে তাকেও বখাটেরা এসিড নিক্ষেপ করে। এতে তার ডান বুকের ওপর অংশসহ পড়নের কাপড় পুড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনিকে উদ্ধার করে ওই রাতেই প্রথমে রংপুর মেডিকেল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঘটনার পরদিন ১৪ আগস্ট মনির বড় ভাই মাজেদুর রহমান সোহেল বাদী হয়ে আরিফুলসহ, আলাল, দুলাল ও একই এলাকার শফিকুলের ছেলে আরিফিনকে (২৬) আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, মনির ওপর এসিড ছুড়ে মারার ঘটনায় ফুঁসে ওঠে রংপুরের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনসহ তার স্কুলের সতীর্থরা। দুস্কৃতিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর এসিড সরবরাহের অভিযোগে রাসেল ওরফে সাদ্দামকে (২২) অভিযুক্ত করে ৫ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। প্রায় আড়াই বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর বুধবার এ রায় ঘোষণা করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে ঘটনার দিন আরিফিনের উপস্থিতি এবং এসিড সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হতে না পারায় সাদ্দামকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর মনি, তার মা সোলেকা পারভীন, বড় ভাই সোহেলসহ পরিবারের স্বজনরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আসামিরা উচ্চ আদালতে গেলেও এ রায় যেন বহাল থাকে। সেই সঙ্গে দ্রুত রায় কার্যকর করারও দাবি জানান তারা।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক জানান, একজন উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় মেয়ে মনির সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন নস্যাৎ করে দিয়েছে বখাটেরা। এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মনি ন্যায় বিচার পেয়েছে।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ২২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test