E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাকার দেশে থাকার প্রমাণ দাখিল

২০১৫ জুলাই ০৮ ১৪:০৯:৫৩
সাকার দেশে থাকার প্রমাণ দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে থাকার সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে দৈনিক পাকিস্তানের ২৯ সেপ্টেম্বর’৭১ সংখ্যার মূল কপি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জমা দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ।

সাকা চৌধুরীর আপিল মামলাটির চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে ২৯ জুলাই। আপিল শুনানি শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার এ দিন ধার্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।

আপিল শুনানিতে একাত্তর সালের ২৯ মার্চ থেকে সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরী দেশেই ছিলেন না বলে দাবি করেন তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

আসামিপক্ষের এ দাবিকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করে তার দেশে থাকার সপক্ষে দৈনিক পাকিস্তানের ২৯ সেপ্টেম্বর’৭১ সংখ্যায় প্রকাশিত সংবাদের ফটোকপি আদালতে দাখিল করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। কিন্তু সেটিকে ভুয়া ও বানানো বলে দাবি করেছিলেন খন্দকার মাহবুব।

বুধবার বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগার থেকে সংগৃহীত পত্রিকাটির মূল কপি জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, ‘ফজলুল কাদের চৌধুরীর এক ছেলে আহত হয়েছিলেন’।

মাহবুবে আলম আদালতে বলেন, এতে সাকা চৌধুরীর কথা বলা হয়েছে। যেহেতু তিনি আহত হয়েছিলেন, সেহেতু তিনি একাত্তরে দেশে ছিলেন। অতএব, সাকা চৌধুরী দেশে ছিলেন না বলে করা আসামিপক্ষের দাবি মিথ্যা।

শুনানি শেষেও মঙ্গলবার খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, একাত্তর সালের ১৩ এপ্রিল থেকে ঘটনার কথা বলেছেন প্রসিকিউশন। আমরা বলেছি, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ২৯ মার্চ ঢাকা থেকে পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে চলে গেছেন। এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেটও দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের মূল বক্তব্য, তিনি দেশেই ছিলেন না। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। পাকিস্তানের উচ্চস্তরের লোক এটা হলফনামা দিয়ে বলেছেন। কিন্তু প্রসিকিউশন বলছেন, তিনি (সাকা চৌধুরী) দেশে ছিলেন। তার ওপর হামলা হয়েছে। গাড়ির চালক মারা গেছেন। আমরা বলেছি, চালকের পরিবারের তরফ থেকে সাক্ষী আনা হোক। কোথায় গাড়ি, কি গাড়ি, চালকের নামও নেই।

খন্দকার মাহবুবের মতে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষীরা শোনা সাক্ষী। সাক্ষীদেরকে দিনের পর দিন সেফহোমে রেখে শেখানো হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষে কি বলতে হবে। আমরা ঘটনা অস্বীকার করছি না। কিন্তু সালাউদ্দিন কাদের উপস্থিত ছিলেন না। আদালত এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে আশা করেন খন্দকার মাহবুব।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলছেন, তিনি দেশে ছিলেন না, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা মিথ্যা। সবশেষে তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনও বলেছেন, দণ্ড কমাতে। আমরা এটাতেও আপত্তি জানিয়েছি।

তিনি বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর তাণ্ডব এবং নির্যাতনের কথা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন। তাদের মতো বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদরা কি মিথ্যা সাক্ষ্য দেবেন নাকি? যারা নির্যাতিত হয়েছেন, তারাও বলেছেন। অবশ্যই সালাউদ্দিন কাদের দেশে ছিলেন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, সার্টিফিকেট দিতেই পারে। এর মানে এই নয় যে, তিনি অপরাধ করেননি। আমি আশা করবো, যে চার অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন, সেটা বহাল থাকবে।

২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই বছরের ২৯ অক্টোবর খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৬ জুন শুরু হয়ে ১৩ কার্যদিবসে এ আপিল শুনানি শেষ হয়। আসামিপক্ষের শুনানিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে সাকা চৌধুরীকে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় বাতিল করে তাকে খালাসের আরজি জানান খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান। অন্যদিকে রাষ্ট্রেপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে ফাঁসির রায় বহাল রাখার আরজি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test