E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 

 

রাজন হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৪:৩০:৪৭
রাজন হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ডের দুইমাস ১৪ দিনের মাথায় বহুল আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।

 

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা পলাতক তিনজন ছাড়া আটক ১০ আসামির উপস্থিতিতে মামলার শুনানি শেষে আদালতে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

আগামী ১, ৪, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিকভাবে এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন রাজনের বাবার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মসরুর আহমদ চৌধুরী শওকত।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আলম, চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, আয়াজ আলী, রুহুল আমীন, দুলাল আহমদ, নূর মিয়া, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, প্রত্যক্ষদর্শী ফিরোজ মিয়া, প্রত্যক্ষদর্শী আছমত উল্ল­াহ, পাবেল আহমদ।

এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম সৌদি আরবে আটক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টাপোলের রেড এলার্ট জারি আছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের মাধ্যমে পুলিশ হেড কোয়াটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশে পলাতক রয়েছেন শামীম ও পাবেল। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৩৮ জনকে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী ও বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মসরুর আহমদ চৌধুরী শওকত। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব ও অ্যাডভোকেট শাহ আশরাফুল ইসলাম।

গত ১৬ আগস্ট শিশু রাজন হত্যা মামলায় ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। অভিযোগপত্রে আসামিদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রফিতার ও তিনজনকে পলাতক দেখানো হয়।

গত ২৪ আগস্ট একই আদালত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রফিতারি পরোয়ানা ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী পরদিন ২৫ আগস্ট জালালাবাদ থানা পুলিশ ৩ পলাতক আসামিদের মালামাল ক্রোক করে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ পলাতক ৩ আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় সীমার মধ্যে পলাতকরা আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠান মূখ্য মহানগর ১ম আদালতের হাকিম সাহেদুল করিম ।

এর আগে গত ২৩ জুলাই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজন হত্যা মামলাটি দ্রুত গতিতে ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি, আমাকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, আগামী তিন/চার দিনের মধ্যে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে পৈশাচিক কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। দেশব্যাপি সমালোচার মুখে টনক নড়ে পুলিশ প্রশাসনের। জনতার সহায়তার একে একে ১২জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর মধ্যে ৮ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

এছাড়া রাজন হত্যাকাণ্ডের পর খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে পুলিশের এক ওসি (তদন্ত) ও দুই এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে গ্রেফতার হওয়া মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম ও শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুচকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি সুরঞ্জিত তালুকদার।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test