E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রমনা বোমা হামলার রায় : ৮ জনের ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন

২০১৪ জুন ২৩ ১২:১৩:০৯
রমনা বোমা হামলার রায় : ৮ জনের ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার দীর্ঘ ১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চাঞ্চল্যকর রমনা বোমা হামলার মামলায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হোসেন সুমন, হাফেজ মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মো. আবদুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান ও মাওলানা আবু বকর। এদের মধ্যে হাফেজ মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মো. আবদুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান ও মাওলানা আবু বকর পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের। এদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন অাদালত।

উল্লেখ, ১৬ জুন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত থাকলেও ওই দিন সম্পূর্ণ রায় লেখা শেষ না হওয়ায় ২৩ জুন রায় দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়।

গত ৮ ও ১৮ মে রাষ্ট্রপক্ষে ও আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। গত ১৮ মে আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষের এসএম জাহিদ সরদার। তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী টিএম আকবর যুক্তিতর্কের জবাবে আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে সকল আসামির খালাস দাবি করেন।

গত ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর আবু হেনা মো. ইউসুফের পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পুনঃসাক্ষ্য প্রদানের সময় মোহাম্মদপুরের যে বাড়িতে হত্যা পরিকল্পনা হয়েছিল, সে ঘটনাস্থলের মানচিত্র আদালতে উপস্থাপন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা শেষ করেন।

গত বছরের ১৪ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মো. ইউসুফ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মোহাম্মদপুরের যে বাড়িতে হত্যা পরিকল্পনা হয়েছিল, সে ঘটনাস্থলের মানচিত্র আদালতে উপস্থাপন করেননি। আইনজীবীদের ভুলে তা উপস্থাপন ছাড়াই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

এরপর শুরু হয় মামলার প্রথম পর্যায়ের যুক্তিতর্ক। এর শেষ পর্যায়ে আসামিপক্ষ তদন্ত কর্মকর্তার ভুলের সুযোগ নিতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এসএম জাহিদ সরদার তড়িঘড়ি করে তা উপস্থাপন করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় সাক্ষ্য প্রদানের (রি-কল) জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন।

কিন্তু আসামিপক্ষে তদন্ত কর্মকর্তার পুনরায় সাক্ষ্য প্রদানের বিরোধিতা করা হয়। তাদের দাবি, যুক্তিতর্কের পর্যায়ে মামলার ত্রুটি সারাতে কোনো সাক্ষীকে রি-কল করা যাবে না।

আসামিপক্ষের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিচারক রুহুল আমিন রি-কলের আবেদন মঞ্জুর করলে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক হোসেন ওই আদেশ আইনানুগ হয়নি বলে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু মামলার তিনটি তারিখেও হাইকোর্টের আদেশ দাখিল করতে না পারায় আদালত পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণের নির্দেশ দেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় সাক্ষ্য দেন। এ সময় সব আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটির ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ১ বৈশাখে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ঘটনাস্থলে ৯ জন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যান। আহত হন অনেকে।

(ওএস/অ/এইচআর/জুন ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test