E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এমপি রানাকে আসামি করে অভিযোগ গঠন

২০১৭ সেপ্টেম্বর ০৬ ২২:০৩:৪১
এমপি রানাকে আসামি করে অভিযোগ গঠন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আমানুর রহমান খান রানা এমপিসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আদালতে অভিযোগ(চার্জ) গঠন করা হয়েছে। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ অভিযোগ গঠন করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১ টায় বিচারক আদালতে বসেন। আসামি পক্ষে তিনটি পৃথক আবেদন করা হয়। প্রথমে আসামি পক্ষের করা মামলা পুনঃতদন্তের জন্য আবেদনের শুনানী করা হয়। এছাড়া রানা এমপি’র উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করা হয়। পুনঃতদন্তের আবেদন ও মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন আদালত খারিজ করে দেন। উন্নত চিকিৎসার আবেদনের শুনানী শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ৩০২/১২০/৩৪ দন্ডবিধি মোতাবেক অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ১৪ জন আসামী রয়েছে। এরমধ্যে তিন জন জামিনে, চার জন জেল হাজতে ও বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে। এরআগে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কাশিমপুর কারাকর্তৃপক্ষ এমপি রানাকে আদালতে হাজির না করায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আট বার পিছিয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টায় কাশিমপুর কারাগার থেকে এমপি রানাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়। এরপর বেলা ১১ টায় শুনানী শুরু হয়। এ সময় আদালত চত্বর সহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এদিকে, আদালত চলাকালে মামলার প্রধান আসামি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ চারভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, আসামী কারাগারে থাকলে তার উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের শুনানি করার বিধান রয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি আমানুর যেহেতু কারাগারে রয়েছেন এবং অভিযোগ গঠনের তারিখ গুলোতে অসুস্থতার কথা বলে তাকে হাজির না করায় শুনানী সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, গত ২৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে বুধবার(৬ সেপ্টেম্বর) সকালে এমপি রানাকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামি পক্ষের করা উন্নত চিকিৎসা, মামলা পূনঃতদন্ত ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির পৃথক তিন আবেদনের মধ্যে দুইটি আবেদন আদালত না মঞ্জুর করেছেন। উন্নত চিকিৎসার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত করেছেন। আগামি ১৮ অক্টোবর এ মামলার স্বাক্ষীর দিন ধার্য করা হয়েছে।

আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম জহির জানান, আদালত এ মামলা পুনঃতদন্ত ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করলেও উন্নত চিকিৎসার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের স্বীকারোক্তিতে এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর থেকে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপণে চলে যান। গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি আমানুর, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা সহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

(আরকেপি/এএস/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৭)


পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test