E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শান্তিতে নোবেল পেল আইসিএএন

২০১৭ অক্টোবর ০৬ ১৫:৩৩:২৯
শান্তিতে নোবেল পেল আইসিএএন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শান্তিতে নোবেল জিতল পরমাণু অস্ত্র বিলুপ্তকরণ জোট আইসিএএন। নরওয়ে নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন শুক্রবার চলতি বছর শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা দেন।

আগে থেকেই সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন কার হাতে উঠছে ২০১৭ সালের শান্তির নোবেল? আগে থেকেই তিনশ ১৮টি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছিল

তবে গত ৫০ বছর ধরে সম্ভাব্য বিজয়ীর তালিকা গোপনই রেখে আসছে নোবেল কমিটি। একেবারে বিজয়ীর নামটাই প্রকাশ করা হয়। আর সে কারণেই নোবেল পুরস্কার নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ থাকে না।

শান্তিতে নোবেলের মনোনয়ন তালিকায় যাদের নাম ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে ও যাদের নামের গুঞ্জণ শোনা যাচ্ছিল তারা হলেন, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল, জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, জো কক্স, বুলগেরিয়ার অর্থোডক্স চার্চ, ডেভিড বোয়ি, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে শেষ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র বিলুপ্তকরণ জোট আইসিএএন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতে।

একদিন আগে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার চলতি বছরের সাহিত্যে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করেছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে দুপুর ১ টায় সাহিত্যে নোবেল জয়ী হিসেবে ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক কাজুয়ো ইশিগুরোর নাম ঘোষণা করা হয়।

বরাবরই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণায় অনেক কানাঘুষা শোনা যায়। গত বছর বব ডিলানের হাতে পুরস্কার ওঠায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। গায়ক এবং গীতিকার হিসেবে পরিচিত বব ডিলানের পুরস্কার জেতাটা অনেকেই মেনে নিতে পারছিলেন না।

চলতি বছরও সবাইকে অবাক করে দিয়ে জাপানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক কাজুয়ো ইশিগুরো জিতে নিলেন সাহিত্যে নোবেল। তিনি চিত্রনাট্যকার, ছোট গল্পকার এবং ঔপন্যাসিক হিসেবেই সমধিক পরিচিত।

কাজুয়ো ইশিগুরোর যখন মাত্র পাঁচ বছর বয়স, তখনই তার পরিবার জাপান ছেড়ে ইংল্যান্ডে চলে আসে। এর আগেও তিনি বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন। চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘নেভার লেট মি গো’, ‘দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে’, দ্য হোয়াইট কাউন্টিস’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রের।

গত বুধবার রসায়ন শাস্ত্রে নোবেল বিজয়ী তিন বিজ্ঞানীর নাম স্টকহোমে ঘোষণা করা হয়েছে। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপির উন্নতির জন্য বিশেষ অবদান রাখায় তারা পুরস্কারটি পান।

বিজয়ী তিনজন হলেন জ্যাকস ডুবোচেট, জোয়াশিম ফ্রাঙ্ক এবং রিচার্ড হেন্ডারসন। চলতি বছর পদার্থে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন রেইনার ওয়েইস, ব্যারি সি. ব্যারিশ ও কিপ এস থোর্নে। মঙ্গলবার রয়াল সুইডিশ একাডেমি স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় এ তিন বিজ্ঞানীর নোবেল জয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

মহাকর্ষীয় তরঙ্গ অনুসন্ধানের স্বীকৃতিস্বরূপ পদার্থের নোবেল পেয়েছেন এই তিন বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানী রেইনার ওয়েইস জার্মান বংশোদ্ভূত। এছাড়া অপর দুই বিজ্ঞানী ব্যারি সি ব্যারিশ ও কিপ এস থোর্নে মার্কিন নাগরিক।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব অভজারভেটরিতে (লিগো- ভিরগো) কাজ করেন এই তিন বিজ্ঞানী।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্ল্যাক হোলে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করার ঘোষণা দেয় লিগো-ভিরগো। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি বলছে, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ এবং শনাক্তরণে সক্ষম হয়েছেন এই তিন বিজ্ঞানী।

মঙ্গলবার স্টকহোমে এক সম্মেলনে নোবেল কমিটির প্রতিনিধি জানান, পদার্থবিদ্যায় চলতি বছরের পুরস্কার এমন একটি আবিষ্কারের জন্য দেয়া হচ্ছে; যা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

লিগো-ভিরগোর গবেষকরা বলেছেন, সূর্য থেকে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দুটি কৃষ্ণ গহ্বরের সংঘর্ষ থেকে উৎপন্ন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করেছেন তারা। মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করার পদ্ধতি আবিষ্কার এবং এ নিয়ে গবেষণায় সফলও হয়েছেন।

এ তরঙ্গ সম্পর্কে শত বছর আগে ধারণা দিয়েছিলেন জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো মহাবিশ্বের মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করেন লিগো-ভিরগোর এই তিন বিজ্ঞানী।

ওই সময় জানানো হয়, সূর্য থেকে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দুটি কৃষ্ণ গহ্বরের সংঘর্ষ থেকে এই তরঙ্গের উৎপত্তি হয়। পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগে মহাকর্ষীয় এ তরঙ্গ অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে; যা পদার্থবিদ্যায় যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটিয়েছে।

১৯০১ সালের পর থেকে নোবেল কমিটি এ পর্যন্ত ১১১ বার পদার্থে নোবেল পুরস্কার দিয়েছে। গত বছর পদার্থের টপোলজি ক্ষেত্রে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল জিতেছেন ব্রিটিশ তিন বিজ্ঞানী।

সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছানুসারে নতুন কোনো কিছু উদ্ভাবন, বিশেষ গবেষণা এবং মানব জাতির কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখার জন্য প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় এ পুরস্কার।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test