E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীনের ৩ প্রস্তাব

২০১৭ নভেম্বর ২০ ১৩:৩৫:৪২
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীনের ৩ প্রস্তাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে তিন স্তরের একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে চীন। প্রস্তাবের প্রথমটিতে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে অস্ত্রবিরতি চুক্তির মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে; যাতে শরণার্থীরা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফিরতে পারেন।

সোমবার রাজধানী নেইপিদোতে এশিয়া-ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জোট আসেমের বৈঠক শুরুর আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ প্রস্তাব দিয়েছে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর ‌‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে’ ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভোগান্তিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে মিয়ানমারের।

এশিয়া-ইউরোপ বা আসেমের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের এই বৈঠক সোমবার নেইপিদোতে শুরু হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক এই বৈঠক প্রতি দুই বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। রাখাইনের সাম্প্রতিক সঙ্কট শুরুর আগে মিয়ানমারে এই বৈঠকের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়।

ঢাকা সফর শেষে রোববার নেইপিদোতে পৌঁছার পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীন বিশ্বাস করে প্রতিবেশি মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সঙ্কটের গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে।

ওয়াংয়ের বরাত দিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলছে, ‘প্রথম পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রাখাইনে অস্ত্রবিরতি কার্যকর করা যেতে পারে। যাতে লোকজন শান্তিতে থাকতে পারেন এবং পালাতে বাধ্য না হন।’

‘সব পক্ষের কঠোর পরিশ্রমের ফলে প্রথম পর্যায়ের প্রস্তাবের লক্ষ্য ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে এবং জ্বালাও-পোড়াও ঠেকানো গেছে। বিশেষ করে সেখানে যুদ্ধের দাবানল পুনরায় জ্বলে উঠেনি।’

যুদ্ধবিরতিতে কাজ হয়েছে উল্লেখ করে ওয়াং দ্বিতীয় প্রস্তাবের ব্যাপারে বলেন, ‘একটি কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করার জন্য দ্বিপাক্ষিক সংলাপে বসা উচিত। তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে দারিদ্র বিমোচনের ওপর ভিত্তি করে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য উভয় দেশের কাজ করা উচিত।’

চীনের এই পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, রাখাইনের সংঘাতের প্রধান কারণে হচ্ছে দারিদ্র্য। মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযান গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে শরণার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া বিদ্রোহীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তারা এখনো সতর্ক অবস্থানে আছে।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে দেশটির এক ডজন পুলিশি তল্লাশি চৌকিতে ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার জেরে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নৃশংস অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। এই অভিযান ঘিরেই রোহিঙ্গা সঙ্কটের শুরু হয়।

হামলায় জড়িত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) গত ১০ সেপ্টেম্বর এক মাসের অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করে। আরসার এই যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার। তবে তখন থেকে রাখাইনে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষ হয়নি।

গত সপ্তাহে রাখাইন সফরে আরসার হামলার নিন্দা এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন দেশটির বেসামরিক সরকারের গণতান্ত্রিক যাত্রার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসন। রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় বিশ্বাসযোগ্য তদন্তেরও আহ্বান জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test