E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইরানে বিক্ষোভ রূপ নিয়েছে সংঘর্ষে, নিহত ৩

২০১৭ ডিসেম্বর ৩১ ১৩:২৯:২৫
ইরানে বিক্ষোভ রূপ নিয়েছে সংঘর্ষে, নিহত ৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে আইন-শৃঙ্খলবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিক্ষোভকারীরা। দেশটির বিপ্লবী বাহিনীর গুলিতে শনিবার রাতে অন্তত তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

তবে স্থানীয় সূত্র বিক্ষোভকারীদের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। আল-আরাবিয়া বলছে, ইরানের লোরেস্তান প্রদেশের দোরাওদ শহরে বিপ্লবী বাহিনীর গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছে।

এদিকে, বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ইরানে তৃতীয় দিনের মতো রাজপথে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রাজধানী তেহরানেও এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীর বেশ কিছু সরকারি ভবনে হামলা ও পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতা সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ ইরানিদের এই বিক্ষোভকে ২০০৯ সালে সংস্কারপন্থী মিত্রজোট ক্ষমতায় আসার পর এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ হিসেবে বলা হচ্ছে।

বিবিসি বলছে, অবৈধ সমাবেশ এড়িয়ে চলার যে পরামর্শ দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় দিয়েছিল তা উপেক্ষা করেই প্রতিবাদ করছেন বিক্ষোভকারীরা। ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওর বরাত দিয়ে দোরাওদ শহরে গুলিতে দুই বিক্ষোভকারীর প্রাণহানির খবর দিয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। সরকারি ভবনেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।

খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার ইরানের মাশাদ শহরে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়। শুক্রবার দেশটির আরো বেশ কয়েকটি বড় শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তি ও বিপ্লববিরোধীদের মদদ রয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন শহরে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা অায়াতুল্লাহ আলী খামেনিবিরোধী স্লোগান দিয়েছেন।

শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের অনেকের মুখে ‘মানুষ ভিক্ষা করছে, নেতারা ঈশ্বরের মতো কাজ করছেন’ স্লোগান শোনা যায়। বিক্ষোভ থেকে ইরানের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতাও করছেন অনেকে। মাশাদ শহরে অনেকেই ‘লেবানন নয়, গাজা নয়, ইরানের জন্য আমার প্রাণ’ স্লোগানও দেয়। দেশটির অভ্যন্তরীন সংকটের চেয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে হস্তক্ষেপের ব্যাপারে ইরানের পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরছেন তারা।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে এটা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে যে আসলে ইরানে কী ঘটছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের আবহার শহরে বিক্ষোভকারীরা সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ছবিযুক্ত বড় ব্যানারে অগ্নিসংযোগ করেছেন। সেন্ট্রাল ইরানে দেশটির সরকারপন্থী বাসিজ মিলিশিয়া গোষ্ঠীর প্রধান কার্যালয়েও আগুন দিয়েছেন তারা।

বিবিসি বলছে, রাজধানী তেহরানের আজাদি স্কয়ারে ব্যাপক জন-সমাগম ঘটিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে বিপ্লবী বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডার বলেছেন, শহরের পরিস্থিতি এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলের কেরমানশাহ শহরে বিক্ষোভে অংশ নেয়া একজন বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট রুহানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি না। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দরকার কিন্তু এর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পচে গেছে। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র এবং এর অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানের সংস্কার প্রয়োজন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test