E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অসম্ভব করে তুলেছে মিয়ানমার’

২০১৮ মার্চ ২৭ ১৪:৫৮:০৭
‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অসম্ভব করে তুলেছে মিয়ানমার’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্ব ঘৃণাবাদ উসকে দেয় এমন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অসম্ভব করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস। দেশটির সেনা নেতৃত্বকে ঘৃণাবাদী সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি মিয়ানমারের কোচিনে এক সেনা সমাবেশে দেশটির শীর্ষ জেনারেল মিং অন রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দিয়ে তারা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারের অধিবাসী নয় বলে দাবি করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।

মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিং অন বলেন, মিয়ানমারের আর সব নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের কোনো মিল নেই। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের দাবিই চলমান সংকটের কারণ।

বিপরীতে বিবৃতিতে গুয়েতেরেস জানান, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যে তিনি মর্মাহত। রোহিঙ্গাদের প্রতি ঘৃণাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে এসে মিয়ানমারের নেতৃত্বকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে দেশটির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে হবে।

গুয়েতেরেস বলেছেন, ‘সেখানে (রাখাইন) পরিস্থিতি এমন করে রাখা হয়েছে যে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

রোহিঙ্গারা বাঙালি বলে ভিত্তিহীন দাবি করে থাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও দেশটির সেনা নেতৃত্ব। কয়েকশ বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম রোহিঙ্গারা রাখাইনে (আরাকান) থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে সেনাবাহিনী সেখানে অবিশ্বাস আর বিদ্বেষ ছড়িয়েছে।

১৯৮২ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনদিয়ে রোহিঙ্গাদের পরিচয়হীন করে তুলে মিয়ানমার। নির্যাতন নিপীড়ন আর রাষ্ট্রীয় নান বিধি নিষেধ আরোপ করে রোহিঙ্গাদের পৃথিবীর সবচে বিপন্ন জাতিগোষ্ঠীতে পরিণত করেছে তারা।

সর্বশেষ নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার ধুয়ো তুলে ২০১৭ সালে নতুন করে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ প্রেক্ষিতে তাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের একটি চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে আট হাজারের মতো রোহিঙ্গার নাম সম্বলিত একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমার যাচাই-বাছাইয়ের নামে সেখান থেকে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার কথা জানায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ প্রত্যাবাসন চুক্তিকে মিয়ানমারের চরম ধোঁকাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test