E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিরিয়ায় হামলা, তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

২০১৮ এপ্রিল ১৫ ১৬:২৫:২৬
সিরিয়ায় হামলা, তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পার্লােমেন্টের অনুমতি ছাড়াই সিরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক হামলায় অংশ নেয়ার জেরে দেশের ভেতরে বিরোধীদের ব্যাপক তোপের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের সঙ্গে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে একযোগে চালানো হামলায় অংশ নেয় ব্রিটেন। দেশটির সেনাবাহিনীকে এ হামলায় অংশ নেয়ার নির্দেশ দেয়ায় সংসদ সদস্যদের তীব্র ক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন থেরেসা।

সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের হোমস থেকে ১৫ মাইল দূরে একটি সেনাঘাঁটিতে আরএএফ টর্নেডো জিআর৪ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের কয়েক ঘণ্টা পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে একটি বিবৃতি দেন। হোমসের ওই অঞ্চলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের রাসায়নিক অস্ত্রাগার রয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটেন।

বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে সিরিয়া হামলায় অংশ নিয়েছে তার দেশ। ডাউনিং স্ট্রিটে রাত ২টার দিকে সামরিক উপদেষ্টা থেরেসা মে'কে হামলার ব্যাপারে হালনাগাদ তথ্য অবগত করেন। এসময় থেরেসা মে বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, তারা এই অভিযানে সফল হবেন।

ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, থেরেসা মে ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এসময় তারা সিরিয়া হামলায় সফল হয়েছেন বলে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।

সিরিয়া হামলায় সফলতা দাবি করলেও দেশের ভেতরে বিরোধী দলীয় ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে থেরেসা। লেবার দলীয় নেতা জেরেমি করবিন অভিযোগ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পার্লামেন্টের অনুমোদন নেয়ার পরিবর্তে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুস্মরণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বোমা কখনো জীবন বাঁচাতে অথবা শান্তি বয়ে আনতে পারে না। পরবর্তীতে আরো উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে পারে এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ পদক্ষেপ। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস ম্যাটিস স্বীকার করেছেন, ধ্বংসাত্মক সংঘাতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হওয়ায় ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধের মতো আলামত পাওয়া গেছে।

তবে লেবার দলীয় অনেক সংসদ সদস্য মনে করেন এই হামলায় অংশ নেয়াটা ছিল যৌক্তিক। কিন্তু তারা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কেন থেরেসা মে সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশন না বসা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন না।

লেবার দলীয় আরেক এমপি জন উডকক বলেছেন, এটা ঠিক যে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদের রাসায়নিক অস্ত্রাগার ধ্বংস করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য আমাদের মিত্রদের সঙ্গে অভিযানে যোগ দিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’কে সংসদে অবশ্যই ব্যাখ্যা করতে হবে যে, কেন তিনি মনে করেন সিরীয় অভিযানে অংশ নেয়ার জন্য পার্লামেন্টে ভোটাভুটির দরকার নেই।

স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা সার্জিওন সিরিয়া হামলায় অংশ নেয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নিন্দা জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টে ঘোড় দৌড়ে অংশ নেয়ার আগে আমাদের হাউস অব কমন্সের অনুমোদন নেয়ার বিকল্প ছিল না।

ব্রিটেনের গ্রিন পার্টির দুই নেতা ক্যারোলিন লুকাস ও জোনাথন বার্টলি বলেছেন, থেরেসা মে সংসদীয় গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছেন। সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, সিরিয়ায় ইঙ্গ-মার্কিন-ফরাসী জোটের ১২ ঘণ্টার ঝটিকা অভিযান শেষ হলেও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার হলে আবারও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন থেরেসা মে। তবে ফের যদি তিনি সিরিয়ায় অভিযানে অংশ নেন তাহলে পার্লামেন্টের অনুমোদন নেয়া হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলছে, সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন থেরেসা মে। এসময় এমপিদের প্রশ্নের জবাব দেবেন তিনি। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test