E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া সমালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র

২০১৮ এপ্রিল ২১ ১৭:৪৪:৩০
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া সমালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক প্রতিবেদনে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতনে জড়িত থাকার পাশাপাশি তাদের বিচার না হওয়ার কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নাগরিকদের নির্যাতন ও হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে সামান্য ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার পরিস্থিতিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে এসব কথা বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দেশটির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন জে সালিভান এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আস্থা না পাওয়ায় অনেকেই সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে সহযোগিতা গ্রহণ করেন না বা অভিযোগ জানান না।

বিচারহীনতার কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও অপরাধ করেও পার পেয়ে গেছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়। এতে বলা হয়, যেসব ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে সরকারি বাহিনীর দ্বারা বিচার বহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, বেআইনি আটক ও গুম করে দেওয়া।

গণমাধ্যমে ‘স্বআরোপিত সেন্সরশিপ’

প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রিত বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ সংবিধানে বাকস্বাধীনতার অধিকার দেওয়া হয়েছে কিন্তু সরকার অনেক সময় এই অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্যর্থ হয়। অনেক সাংবাদিক হয়রানি ও রোষানলের ভয়ে সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্রে স্বআরোপিত সেন্সরশিপ আরোপ করছেন।

২০১৬ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাংবাদিক কনক সারওয়ারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রত্যাহারের পাশাপাশি বেসরকারি কোম্পানিকে বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করতে গোয়েন্দা সংস্থা চাপ দিচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বেসরকারি মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম ভিন্ন মত ধারণ করে। তবে রাজনৈতিক পক্ষপাত ও স্বআরোপিত সেন্সরশিপ এখনও একটি সমস্যা। বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে সরকার বিজ্ঞাপনকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।’

২০১৭ সালে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণের স্বল্প স্বাধীনতা ছিল বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, গোটা বছরে দুর্নীতি, সহিংস পরিস্থিতি ছিল। সেই সঙ্গে ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার-আদিবাসী-উপজাতি-লৈঙ্গিক পরিচয়ের কারণে বৈষম্য ঘটেছে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত

আন্তর্জাতিক সহিংস চরমপন্থা দ্বারা অনুপ্রাণিত গোষ্ঠী বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে ফেসবুক পোস্টের গুজবে রংপুরে ৩০ হিন্দু বাড়িতে হামলার কথা উল্লেখ করা হয়।

সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার ব্রিফিংয়ের সময় কথা বলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে নিয়েও। তিনি বলেন, এই ঘটনায় দায়ীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানো হয়েছে আমরা তার নিন্দা জানাই। এই সংকট সমাধানে আমরা আমাদের সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করছি।’

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test