E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শতাব্দীর ভয়াবহতম বন্যা কেরালায়, নিহত ৩২৪

২০১৮ আগস্ট ১৮ ১৩:৩৭:৩০
শতাব্দীর ভয়াবহতম বন্যা কেরালায়, নিহত ৩২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কেরালা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের বন্যাকে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। শনিবার সকালে কোচি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আবহাওয়া খারাপ থাকায় নির্ধারিত সময়ের কিছু পরেই সেখানে পৌঁছান তিনি। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ান এবং কেন্দ্রীয়মন্ত্রী কেজে আলফোন্সের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদি।

কেরালায় পৌঁছনোর আগে এক টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারকাই বিজয়নের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে গিয়ে উদ্ধারকাজ পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

রাজ্যের বেশ কিছু নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। মূলত অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। কেরালা ছাড়াও ভারতের আরও কিছু রাজ্যে মৌসুমী বৃষ্টির কারণে বন্যা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারত জুড়ে কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে কেরালায়।

গত ৩৬ ঘন্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৬০ জনের। কমপক্ষে ৩ লাখ ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সহায়তা করতে উদ্ধারকারী দল, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষী বাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রতিবছর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে কেরালায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু গত নয়দিন ধরে একটানা বৃষ্টিপাতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলছেন, গত এক শতাব্দীর মধ্যে এরকম বন্যা দেখেনি রাজ্যের মানুষ।

ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বাড়ি-ঘর এবং ব্রিজ ধসে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বিমান এবং রেল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

১৫ শতাধিক ত্রাণ শিবিরে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। রাজ্যজুড়ে পানির স্তর ক্রমশ বাড়তে থাকায় ৮০টি বাঁধ খুলে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাজধানী থিরুভনন্তপুরমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের ১৪টির মধ্যে একটি বাদে বাকি ১৩টি জেলাই বন্যার কবলে পড়েছে। ওই ১৩ জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন।

কেরালার রেলওয়ে বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় রেল লাইন পানিতে তলিয়ে গেছে। কোচির বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে ডুবে গেছে। মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে বাস চলাচলও। রানওয়েতে পানি জমে যাওয়ায় আপাতত কোচি বিমান বন্দর থেকে বিমান ওঠানামাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলি থেকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মানুষকে উদ্ধার করে আনা হচ্ছে। রাজ্যের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বৃষ্টি না থামায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ্যজুড়ে ৩০টির বেশি সেনা হেলিকপ্টার এবং ৩২০টি নৌকা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর ৪২টি, সেনাবাহিনীর ১৬টি, উপকূলরক্ষী বাহিনীর ২৮টি এবং এনডিআরএফের ৩৯টি দল রাজ্যজুড়ে কাজ করছে। এনডিআরএফের আরও ১৪টি দল উদ্ধারকাজে অংশ নিতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

কেরালার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন টেলিকম সংস্থা। কথা বলা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য কোনও খরচ হচ্ছে না। তাছাড়া মোবাইল বিল জমা দেওয়ার সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। ত্রিচুর থেকে শুরু করে আলুভার মতো জেলায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে সেনা বাহিনী।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test