E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘এখনও রোহিঙ্গা নিধন চলছে’ 

২০১৮ অক্টোবর ২৫ ১৬:১৭:৫৪
‘এখনও রোহিঙ্গা নিধন চলছে’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখনও সেখানকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংঘটন করছে বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান।

মার্যুকি দারুসমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর এখনও নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে। সেখানকার রোহিঙ্গারা এখনও তীব্র অত্যাচার ও কঠোর নিষেধাজ্ঞার শিকার হচ্ছে। ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে কার্যত কিছুই পরিবর্তন হয়নি।’

বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন দারুসমান। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো ছয়টি সদস্য দেশের অনুরোধে এই বৈঠকটি করে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ।

এবছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হওয়া সহিংসতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো সহিংসতা ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ’।

প্রতিবেদনের সুপারিশ

ওই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয় যে এসব অপরাধের দায়ে মিয়ানমারকে যেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সমর্পণ করা হয় বা অ্যাড-হক ট্রাইব্যুনালের (বিশেষ বিচারের) আওতায় আনা হয়।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যেসব ব্যক্তি এই সহিংসতার জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা’ জারি করতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান।

প্রতিবেদনে বিশেষ করে উঠে আসে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৬ জন জেনারেলের নাম। ওই জেনারেলদের সাথে রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করা কমান্ডার-ইন-চিফদের শাস্তি দেয়ার সুপারিশও করা হয় প্রতিবেদনে।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত, দুই পর্যায়েই আন্তর্জাতিক সবধরনের সমর্থন পাওয়া থেকে তাদের বিরত রাখতে হবে।’

এর পাশাপাশি, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত সব সংস্থার ওপর অর্থনৈতিক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সুপারিশ করা হয়।

মিয়ানমার কী বলছে?

এই প্রতিবেদনের তথ্য অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত হাউ ডু সুয়ান নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ‘পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তার দায় স্বীকার করতে প্রস্তুত আমরা।’

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার দাবি করছে, দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গি তৎপরতা সামাল দিতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তাদের সেনাবাহিনী তাই করছে। মিয়ানমারের এই বক্তব্যের বিপরীতে মার্যুকি দারুসমান বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষা মানবাধিকার লঙ্ঘন বা গণহত্যা চালানোর অজুহাত হতে পারে না।’

নিরাপত্তা পরিষদের দুই সদস্য চীন এবং রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষ নিতে তাদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে বলে ধারণা করছেন কূটনীতিকরা।

জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত এরই মধ্যে জানিয়েছেন মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠালে তারা সেটা কখনোই মেনে নেবে না। বুধবারের এই বৈঠকের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের ৯ সদস্য দেশ ভোট দেয়। চীন, রাশিয়া ও বলিভিয়া এই বৈঠক অনুষ্ঠানের বিপক্ষে ভোট দেয়। সূত্র: বিবিসি

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test