E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খাশোগির শেষ কথা ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’

২০১৮ ডিসেম্বর ১০ ১৫:৪২:৩৭
খাশোগির শেষ কথা ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির বিষয়ে তদন্ত প্রতিনিয়ত নতুন মোড় নিচ্ছে। সম্প্রতি এক অডিও টেপ তুরস্ক গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এসেছে। সেখানে খাশোগিকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’। এটিই ছিল মৃত্যুর আগে খাশোগির শেষ কথা।

তুরস্কের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, খাশোগি হত্যা পরিকল্পিত। কয়েকবার কল করে তাকে হত্যার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

তুরস্ক বলছে, এই ফোন কলগুলো রিয়াদের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এসেছিল।

তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা অডিও রেকর্ড থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করেছে। অডিও রেকর্ডের বরাত দিয়ে তুরস্ক বলছে, অডিও টেপে হত্যার আগে খাশোগির কথাবার্তা রেকর্ড রয়েছে। সেখানে হত্যার আগে খাশোগির বার বার বাঁচার আর্তি শোনা গেছে।

তুরস্ক বলছে, প্রমাণাদি হাতে এসেছে। তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৫ জনের একটি দলকে সৌদি থেকে পাঠানো হয়। খুব সম্ভবত খাশোগিকে হত্যার পর তার দেহ করাত দিয়ে টুকরো টুকরো করা হয়।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগান বার বার সৌদির কাছে খাশোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের বহিষ্কার করার দাবি জানিয়েছে। তবে সর্বশেষ রোববার (৯ ডিসেম্বর) এরদোগানের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত ২ অক্টোবর সৌদি কনস্যুলেটে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে গেলে নিখোঁজ হন সাংবাদিক খাশোগি। যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক খাশোগি ছিলেন বাদশাহ-যুবরাজসহ সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক।

এ ঘটনার পর থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছিল-সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমদিকে অস্বীকার করে নানা রকম কথা বললেও অবশেষে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগি নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সৌদি। তবে তারা দাবি করে, কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘মারামারি’ করে নিহত হন এ সাংবাদিক। সবশেষ গত ১৫ নভেম্বর দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল সৌদ আল মোজেব দেশটির রাজধানী রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরে টুকরো টুকরো করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।

সেসময় সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, খাশোগির শরীরে ড্রাগ ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর তাকে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর টুকরো করা দেহ কনস্যুলেটের বাইরে এক এজেন্টকে হস্তান্তর করা হয়।

এ হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান জড়িত বলে দাবি করছে তুরস্ক। তবে বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে সৌদি।

আমেরিকায় বসবাসরত খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত লিখতেন। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের ছোট ভাই এবং আমেরিকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের সঙ্গে খাশোগির টেলিফোন আলাপ মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ পরীক্ষা করেছে। ওই ফোনালাপে খালিদ খাশোগিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গিয়ে সৌদি কনস্যুলেট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে বলেন। কিন্তু খাশোগি সেখানে গিয়ে নিহত হন। আর এসব কিছু তিনি ভাই মোহাম্মাদ বিন সালমানের নির্দেশে করেছেন বলে সিআইএ দাবি করেছে। খাশোগি হত্যার দুইদিন পরই খালিদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে সৌদি আরব ফিরে যান। অন্য একজনকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test