E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তান?

২০১৯ আগস্ট ০৮ ২২:০৬:৩০
যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তান?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুসলিম প্রধান অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলে ভারতীয় সিদ্ধান্তের পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মাঝে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ নজরদারি এবং প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

পাকিস্তান ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত, রেলযোগাযোগ বন্ধ ও ইসলাবাদ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

হিমালয় অঞ্চলের দীর্ঘদিনের বিতর্কিত কাশ্মীর ঘিরে অতীতে দু'বার সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের আকাশসীমার কিছু অংশ বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির নতুন এই পদক্ষেপে এখন অনেকের প্রশ্ন, ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর সঙ্কট নিয়ে আবারো কি সামরিক সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাক-ভারত?

বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। কাশ্মীর ঘিরে নতুন উত্তেজনা দেখা দেয়ায় ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে কথা বলেন তিনি। তবে কুরেশি বলেন, আপাতত সামরিক উপায়ের কথা ভাবছে না পাকিস্তান।

পাক এই মন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরের দীর্ঘদিনের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের জবাব রাজনৈতিক ও আইনি উপায়ে দিতে চায় ইসলামাবাদ। তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেয়ার অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। আমরা সামরিক উপায়ের কথা ভাবছি না। আগ্রাসনের জবাব দেয়ার অধিকার কি আমাদের নেই?

এর আগে সোমবার হিমালয় অঞ্চলের ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা-সংক্রান্ত দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের একটি প্রস্তাব রাজ্যসভায় পাস হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নির্বাহী এ আদেশে পার্লামেন্টে পাস হয়।

১৯৫৪ সাল থেকে ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মীর বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছিল। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতো না। কিন্তু এ বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ায় কাশ্মীর এখনো আলাদা একটি অঞ্চলে পরিণত হবে। একই সঙ্গে কাশ্মীর ভেঙে লাদাখ নামে কেন্দ্রশাসিত একটি অঞ্চল গঠন করা হবে; যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে ফেডারেল সরকারের হাতে।

কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় আসার ফলে এখন ভারতীয়রা কাশ্মীরে জমি কিনতে ও সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের আগেই কার্যত কাশ্মীরকে পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের পাশাপাশি বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় এই উপত্যকায়।

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৩০ হাজার অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র অমরনাথ যাত্রা বাতিল করে কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ দেয় সরকার। অমরনাথ যাত্রায় সন্ত্রাসী হামলার গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানানো হয়।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছে পাকিস্তান। কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিলের নিন্দা জানিয়ে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বুধবার বহিষ্কার করে পাকিস্তান। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করা হয়েছে।

নয়াদিল্লি পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। স্পুটনিক।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test