E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিগগিরই অযোধ্যা মামলার রায়, উত্তরপ্রদেশ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা

২০১৯ নভেম্বর ০৮ ১৭:৫৩:২৭
শিগগিরই অযোধ্যা মামলার রায়, উত্তরপ্রদেশ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায় হতে যাচ্ছে। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আজ শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিব এবং পুলিশ প্রধানকে নিজের চেম্বারে ডেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। দেশটির গণমাধমে এ খবর জানানো হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ-প্রশাসনের প্রধানদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির এমন বৈঠকের কারণেই রায় যে শিগগিরই হচ্ছে তার ইঙ্গিত মিলছে। এছাড়া রঞ্জন গগৈ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি অবসরে যাওয়ার আগেই বিতর্কিত এ মামলার রায় দিয়ে যাবেন। আগামী ১৭ নভেম্বর অবসরে যাচ্ছেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি শুক্রবার দুপুরে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র কুমার এবং পুলিশের মহাপরিচালক ওম প্রকাশ সিংহকে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, অযোধ্যাসহ গোটা রাজ্যে নিরাপত্তার আগাম কী বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তা নিয়ে এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

প্রধান বিচারপতির ঘোষণা অনুযায়ী অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলার রায় নিয়ে তার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির একটি বেঞ্চ ৪০ দিন শুনানি হয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতির অবসর গ্রহণের দিন ১৭ নভেম্বর হলেও তার শেষ কর্মদিবস ১৫ নভেম্বর। তাই ১৫ নভেম্বরের আগেই রায় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রায়ের পরে কোনও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তা মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে রাজ্য সরকারের প্রধান দুই কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বৃহস্পতিবারই জানায়, অযোধ্যা, সংলগ্ন জেলা এবং গোটা রাজ্যে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রাদেশিক রাজধানী লক্ষ্ণৌর ওই মুখ্যমন্ত্রী রায় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় লক্ষ্ণৌ ও অযোধ্যায় দুটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ছাড়া পুলিশ-প্রশাসনের প্রবীণ কর্মকর্তাদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে স্পর্শকাতর এলাকায় রাতেও তাবু গেড়ে অবস্থান করাসহ সামাজকি যোগাযোগের মাধ্যগুলোও কড়া নজরদারির মধ্যে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারও গত বৃহস্পতিবারই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে পৃথক নির্দেশনা পাঠিয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছিল ওই নির্দেশনায়। পাশাপাশি আধা সামরিক বাহিনীর ৪ হাজার সেনা আগেই সেখানে পাঠানো হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বাবরি মসজিদ ধূলিসাৎ করে। তাদের দাবি, হিন্দুদের ভগবান রামচন্দ্র’র জন্মস্থানে থাকা মন্দির ভেঙে সেই কাঠামোর ওপর ১৫২৮ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের সৈন্যরা বাবরি মসজিদ গড়ে তুলেছিল। তাই সেটি ভেঙে ফেলতে হবে।

কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা ষোড়শ শতকে নির্মিত ওই মসজিদটি ভেঙে ফেললে ভারতজুড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা দেখা দিয়েছিল। অযোধ্যার ২ দশমিক ৭৭ একর জমির মালিকানা সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া না ভগবান রামচন্দ্রর (রাম লালা) হবে তারপর থেকে সেই নিয়ে শুরু হয় বিবাদ।

উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২০১০ সালে বিতর্কিত ওই জমি বিবদমান তিন পক্ষকে সমানভাবে ভাগ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু হাইকোর্টের সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ হয় সুপ্রিম কোর্টে। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর আগে টানা শুনানির নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, অবসরের আগেই তিনি এই বিবাদের মীমাংসা করে যাবেন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test