E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইরানে বিমান বিধ্বস্তে ট্রাম্পকে দায়ী করলেন ট্রুডো

২০২০ জানুয়ারি ১৪ ১৭:২৪:২৬
ইরানে বিমান বিধ্বস্তে ট্রাম্পকে দায়ী করলেন ট্রুডো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও ইরানের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সাম্প্রতিক উত্তেজনা তৈরি না করতো তাহলে বিধ্বস্ত বিমানের যাত্রীরা হয়তো এখনও বেঁচে থাকতেন।

কানাডার এই প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি কোনো উত্তেজনা না থাকতো, ওই অঞ্চলের উত্তেজনা না বাড়তো, তাহলে বিমানের কানাডীয় আরোহীরা এখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের বাড়িতে থাকতেন।’

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অ-পারমাণবিক ইরানের খুব, খুবই প্রয়োজন। কিন্তু একই সঙ্গে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের কারণে যে উত্তেজনা; সেটিরও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

গত বুধবার তেহরান থেকে ইউক্রেনের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭ উড্ডয়নের পরপরই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত এই বিমানের ১৭৬ আরোহীর সবাই মারা যান। নিহত যাত্রীদের অন্তত ৫৭ জন কানাডার নাগরিক; যাদের অনেকের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল।

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের মার্কিন-ইরান দ্বন্দে প্রচণ্ড উত্তেজনা দেখা দেয় গত ৩ জানুয়ারি। ওই দিন বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশি সশস্ত্র শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর এই উত্তেজনায় পারদ চড়ে।

জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ইরাকে অবস্থিত মার্কিন দুটি সামরিক ঘাঁটিতে এক ডজনের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী একটি বিমানে ভুলেই গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। ইরানের প্রেসিডেন্ট বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনাকে ক্ষমার অযোগ্য মানবীয় ভুল বলে মন্তব্য করেছেন।

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের কাছে থেকে পরিষ্কার এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য দাবি করে আসছেন জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার সময় তিনি এই দাবি জানিয়েছেন। বিমানটি ভুলেই ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে শনিবার স্বীকার করেন রুহানি।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, তিনি রুহানিকে এই স্বীকারোক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আরও অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও ইরানের প্রেসিডেন্টকে জানান তিনি।

কানাডীয় এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। এ ধরনের রোমহর্ষক নির্মমতা কীভাবে ঘটল, সেব্যাপারে আমাদের পূর্ণাঙ্গ পরিষ্কার ব্যাখ্যা দরকার। অবশ্যই ইরানকে এর পুরো দায় নিতে হবে।

বিমান বিধ্বস্তে নিহত প্রত্যেক কানাডীয় নাগরিকের জন্য ইরানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। কানাডার এক পরিসংখ্যান বলছে, উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে অন্তত ২ লাখ ১০ হাজার ইরানি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক বসবাস করছেন।

মঙ্গলবার ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেব্যাপারে কোনও তথ্য দেয়া হয়নি। এদিকে, ভুলেই বিমান বিধ্বস্ত করা হয়েছে বলে ইরানের ক্ষমতাসীন সরকার স্বীকারোক্তি দেয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

টানা তৃতীয় দিনের মতো চলমান এই বিক্ষোভ থেকে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পদত্যাগের দাবি উঠেছে। বিক্ষোভ দমনে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী টিয়ারগ্যাস ব্যবহারের পাশাপাশি মঙ্গলবার অন্তত ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test