E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এই অবস্থা!

২০২০ মার্চ ১৭ ১২:২০:১১
খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এই অবস্থা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৬৬৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮৭ জন। ইতোমধ্যেই দেশটির অন্তত ৪৯টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে যে হারে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে আশঙ্কা করা হচ্ছে অন্তত এক মিলিয়ন (১০ লাখ) নাগরিক এতে আক্রান্ত হবেন।

তবে এর চেয়ে আশঙ্কার কথা হলো দেশটিতে চাহিদার তুলনায় করোনা রোগীর সেবায় ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার যন্ত্র) অপ্রতুল। মাত্র এক লাখ ভেন্টিলেটর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

তারা আরও বলেছেন, দেশটিতে নির্দিষ্ট কোনো বিধান বা মানদণ্ড নেই যাতে করে জরুরিকালীন অবস্থায় এসব দুর্লভ চিকিৎসা সামগ্রী যথাযথভাবে ব্যবহৃত হতে পারে। অর্থাৎ, কারা এসব চিকিৎসা সামগ্রী ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন, তার কোনো বিধান নেই যুক্তরাষ্ট্রে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে বসলে অবস্থা মারাত্মক হতে পারে। এতে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়। তখন কৃত্তিমভাবে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার ব্যবস্থ করে দিতে হয়। এজন্য ভেন্টিলেটর করোনা রোগীর জন্য খুবই জরুরি।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এ পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী ৭ হাজার ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫০।

বিশ্বের ১৬২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে নতুন করে আরও ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৮১।

চীনা মূল ভূখণ্ডের ৪৪ হাজার করোনা আক্রান্ত রোগীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশ রোগী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হালকা সমস্যায় ভুগেছেন। ১৯ শতাংশ রোগী নিউমোনিয়া বা এর চেয়ে খারাপ কিছুতে ভুগেছেন। এবং তাদের অধিকাংশকেই হাসপাতালে নিতে হয়েছে ও কৃত্তিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হয়েছে।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রায় দুই মাসের জন্য সব ধরনের জনসমাগম বা অনুষ্ঠান বাতিলের পরমর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্য ও শহরে ক্যাফে, বার বা রেস্টুরেন্টে জনসমাগত সীমিত করা হয়েছে। অন্তত ৩২টি রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনা আতঙ্কে লাস ভেগাসের বেশ কিছু রিসোর্ট, ক্যাসিনো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিউইয়র্কের সব নাইটক্লাব, মুভি থিয়েটার ও কনসার্ট ভেন্যু বন্ধ করে দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, সেখানকার রেস্টেুরেন্ট, বার ও ক্যাফেগুলো থেকে খাবার শুধু ডেলিভারি নেয়া যাবে, কেউ জায়গাগুলোতে বসে খেতে পারবেন না।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেন।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কার্যক্রমে পুরোপুরি অচলাবস্থা (ফুল শাটডাউন) নেমে আসতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনকি করোনার কারণে দেশটিতে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা দুই মাস পর্যন্ত চলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি এমন আশঙ্কা করেছেন। ডেইলি মেইল।

(ওএস/এসপি/মার্চ ১৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test