E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোদীকে ঠেকাতে মমতাকে পাশে চান সোনিয়া

২০১৪ মে ১৪ ১১:৫৯:৪৩
মোদীকে ঠেকাতে মমতাকে পাশে চান সোনিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবার সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চান সোনিয়া গান্ধী৷ সোমবার সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস কোর কমিটির বৈঠক বসেছিল৷ সেখানে দুটি সিদ্ধান্ত হয়৷ প্রথমটি হল, মোদীকে ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে৷ দুই, এক্সিট পোলের ফলাফল দল খারিজ করবে৷ প্রথম উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে গেলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলসহ আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে পেতেই হবে কংগ্রেসকে৷ সে জন্যই মমতাকে পাশে পেতে ঝাঁপাতে চায় কংগ্রেস৷ মমতার সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন খোদ সোনিয়া গান্ধী৷

ইউপিএ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস বেরিয়ে আসার পর গত বছর দেড়েক কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক মোটেই মধুর নয়৷ কিন্ত্ত সেই সম্পর্ককে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন সোনিয়া নিজে৷ কংগ্রেস সূত্রের খবর, ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পর মমতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রাখবেন সোনিয়া৷ এমনিতে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক খারাপ হলেও সোনিয়ার সঙ্গে মমতার সম্পর্কে উষ্ণতায় ভাটা পড়েনি৷ দু'জনেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেই সম্পর্ককে চাগিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন সোনিয়া৷ কংগ্রেসের এক প্রধান নেতার কথায়, 'ভবিষ্যতের জন্য তৃণমূল-সহ অনেক আঞ্চলিক দলকেই আমরা পাশে পেতে চাই৷ সে জন্যই যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷' এই আঞ্চলিক দলের তালিকায় রয়েছে, মায়াবতীর বসপা, মুলায়মের সমাজবাদী পার্টি, চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির মতো দলগুলি৷

তবে এই সব নেতা-নেত্রীদের মধ্যে মমতাকেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কংগ্রেস৷ এ ব্যাপারে সোনিয়ার হিসাবটা স্পষ্ট৷ যে সব রাজনৈতিক দল মুসলিম ভোট পায় এবং অদূর ভবিষ্যতে যাঁদের বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে, তাঁরা নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যেতে পারবেন না৷ তৃণমূলের ক্ষেত্রে দুটিই সত্য৷ ২০১৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে৷ তা ছাড়া রাজ্যের মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ পাওয়ার ব্যাপারে মমতা সচেষ্ট৷ তাই তাঁর পক্ষে মোদীকে সমর্থন করা সম্ভব নয়৷ তার উপরে মোদী সম্প্রতি রাজ্যে গিয়ে মমতাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করার পর থেকেই তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব পাল্টেছে৷ তার পর থেকেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে মমতা সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ভাবনারও শুরু৷

ভোটপর্ব চলার সময় থেকেই কংগ্রেস নেতারা কীভাবে নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকানো যায়, তার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন৷ সোমবার কোর কমিটির বৈঠকেও সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷ কী ভাবে সেটা হবে, কংগ্রেস নিজে সরকার গঠন করতে যাবে, না কি আঞ্চলিক দলের কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, সেই সব বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনা হয়নি৷ ভোটের ফলাফল না দেখে সেই আলোচনা হওয়ার কথাও নয়৷ কিন্ত্ত কংগ্রেস মোটামুটি সব বিকল্পই খোলা রাখছে৷ অবশ্য পুরোটাই নির্ভর করছে, যদি ফলাফল বেরনোর পর খেলাটা কিছুটা হলেও তাঁদের হাতের মধ্যে থাকে৷ খেলা সম্পূর্ণ হাতের বাইরে গেলে অবশ্য তাঁদেরও কিছু করার নেই৷ তখন আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে পেয়েও কিছু করার থাকবে না৷ তাই ভোটের ফল দেখার পর মমতা, মায়াবতী, মুলায়ম, চন্দ্রশেখর রাওদের জন্য পুরোদস্ত্তর ঝাঁপাবেন সনিয়া৷ কংগ্রেস নেতাদের বিশ্বাস, আপাতত মোদীকে ঠেকাতে পারলে বিজেপির মধ্যে গন্ডগোল প্রবল আকার নেবে৷ ভবিষ্যতে মোদীর ম্যাজিক এ ভাবে কাজ করবে না৷ এত চেষ্টার পর প্রধানমন্ত্রী হতে না পারলে মোদীও ভেঙে পড়বেন৷ সব মিলিয়ে তাই একটা চ্যালেঞ্জ নিতে চায় কংগ্রেস৷ তবে সেটা সফল হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, সেটা ১৬ মে বোঝা যাবে৷

(ওএস/এইচআর/মে ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test