E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নতুন সংবিধানের পথে শ্রীলঙ্কা

২০১৬ জানুয়ারি ১০ ১৭:৪৯:৩৬
নতুন সংবিধানের পথে শ্রীলঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কা সরকার নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে পার্লামেন্টে। জনগণের ক্ষমতায়ন, সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করাই এই সংবিধানের উদ্দেশ্য।

বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন না করে একেবারে নতুন সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগকে বিরোধীদলগুলো সরকারের ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংখ্যালঘুসহ নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান পাল্টানো প্রয়োজন।

শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা সংস্কারপন্থি। দেশটির ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান হওয়ার পরও সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি কাটেনি। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার তামিলরা সরকারের প্রতি আস্থাশীল নয়। এ বিষয়ে সামঞ্জস্য বিধান করতে চায় সরকার। এ ছাড়া সরকার ও তামিল টাইগারদের মধ্যে গৃহযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন প্রেসিডেন্ট। এসব বিষয়ে নতুন সংবিধানে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে।

গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপাকসের দল বিপুল ব্যবধানে হেরে যায় সিরিসেনার দলের কাছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রতিতে ‘গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার’ সুসংহত করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

শনিবার পার্লামেন্টে উত্থাপিত নতুন সংবিধানের প্রস্তাবে যেসব বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গণতান্ত্রিক অধিকার শক্তিশালীকরণ, জাতীয় ঐক্য এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় টেকসই রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা। নতুন সংবিধান জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীতার নিশ্চয়তা দেবে, যা নাগরিকের মর্যাদা সংহত করবে এবং দায়িত্বশীল ও জবাবদিহি সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার ঘনিষ্ট এক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, ‘মূল ধারণা হলো, তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষমতায়ন এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা, যাতে আর একটি গৃহযুদ্ধ রোধ করা যায়।

তবে কয়েকজন বিরোধী সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছেন, কয়েকটি পশ্চিমা দেশকে খুশি করতে এবং শ্রীলঙ্কার প্রধান ধর্মকে খাটো করতে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে সংখ্যালঘু তামিলদের অনেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ে চাকরি করতেন। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীন হওয়ার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ লঙ্কানদের চাপে তামিলরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। লঙ্কানদের সঙ্গে তামিলদের চরম বৈষম্য শেষপর্যন্ত গৃহযুদ্ধে রূপ নেয় ১৯৮৩ সালে। দীর্ঘ এই যুদ্ধে অনেক মানুষ মারা যায়। সেই ইতিহাস ভুলে শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চান। যে কারণে নতুন সংবিধান প্রণয়নের রয়েছে তারা।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।

(ওএস/এইচআর/জানুয়ারি ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test