E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভারতে জেএমবির ছয় সদস্য গ্রেফতার

২০১৬ সেপ্টেম্বর ২৬ ১৮:৩৬:১৩
ভারতে জেএমবির ছয় সদস্য গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ছয় সদস্যকে পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গ্রেফতারকৃত জেএমবির ছয় জঙ্গির মধ্যে ভারতে নিযুক্ত ওই সংগঠনের দুই প্রধান রয়েছে বলে এসটিএফ দাবি করেছে। এদের মধ্যে তিন বাংলাদেশিও রয়েছে।

সোমবার এসটিএফ প্রধান বিশাল গর্গ জানিয়েছেন, অাসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গা থেকে ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিন বাংলাদেশি রয়েছে; বাকিরা ভারতের।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে ইনাম ওরফে কালুভাই, জাহিদুল শেখ ওরফে জাফর ওরফে জাবিরুল, রফিক ওরফে রুবেল ওরফে পিছি, মাওলানা ইউসুফ ওরফে বক্কর ওরফে আবু খেতাব, শাহিদুল ওরফে সূর্য ওরফে শামিম এবং আব্দুল কালাম ওরফে কলিম। গ্রেফতারকৃত ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনের নাম ইতিমধ্যেই খাগড়াগড় মামলার চার্জশিটে রেখেছিল ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এএনআই)। এমনকি এই ছয় জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছিল তারা।

লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসটিএফ প্রধান জানান, দু’দিন আগে অাসামের কাছাড় থেকে একটা জাল নোটের মামলায় কলকাতা এসটিএফ জাবিরুলকে গ্রেফতার করে। তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এর পর জাবিরুলকে লাগাতার জেরা করে জানা যায়, সে জেএমবি-র সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয়, তার কাছ থেকে বেশ কয়েক জন জেএমবি জঙ্গির খবর জানতে পারে এসটিএফ। সেই সূত্র ধরে রোববার নিউ কুচবিহার স্টেশন থেকে কালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, কালাম বাংলাদেশ থেকে অাসাম হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার চেষ্টায় ছিল। বাংলাদেশ থেকে তাকে কাছাড়ে সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতে পাঠানো হয়েছিল।

এর পর উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ-বাগদা রোডের উপর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি জায়গা থেকে ইনাম এবং রফিককে গ্রেফতার করা হয়। ইনাম এ রাজ্যে জেএমবি ইউনিটের প্রধান। তার বাড়ি বাংলাদেশের জামালপুরে। রফিকের বাড়িও ওই একই জায়গায়। সে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরিতে পারদর্শী। বাংলাদেশ থেকে এ দেশে আসা জেএমবি সদস্যদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিত রফিক।

এসটিএফ প্রধান জানিয়েছেন, এর পরে ওই জেলারই বসিরহাটের নতুন বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ইউসুফ এবং শাহিদুলকে। ইউসুফের বাড়ি বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে। তার সন্ধান দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছিল এনআইএ। এসটিএফের দাবি, শাহিদুল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান হিসেবে কাজ করত। ভারতে বিভিন্ন নাশকতামূলক ছকের মূল পরিকল্পনাকারীও সে। তার বাড়ি অাসামের বরপেটায়।

গ্রেফতারকৃতদের কাছে থেকে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নাশকতার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কাগজপত্র, বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, প্রায় দু’কেজি সাদা বিস্ফোরক পাউডার, বিয়ারিং-বল, তার কাটা যায় এমন জিনিস এবং ব্যাটারিও উদ্ধার করেছে এসটিএফ। রফিকের কাছে কেমিক্যাল কমপাউন্ডের একটি বই; ইউসুফ এবং ইনামের কাছে বিস্ফোরক পাওয়ার দাবি করেছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ এই শাখা।

ইনামের কাছে সাংগঠনিক ছকও পেয়েছে পুলিশ। রফিকের কাছে বাংলাদেশি ট্রেড লাইসেন্সও মিলেছে। এসটিএফ-এর দাবি, গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকেই খাগড়াগড়-কাণ্ডের পরে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতে পালিয়ে ছিল। জেরার মুখে ওই জঙ্গিরা স্বীকার করেছে, তারা একটি বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল। তবে, সেই নাশকতা কলকাতায় সংঘটনের কোনও উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। দক্ষিণ বা উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও জায়গাকে তারা বেছে নিত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।

এসটিএফ প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সাংকেতিক ভাষায় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। সেই ভাষার অর্থ খুঁজে বার করে ধরা হয়েছে। সোমবার তাদের আদালতে তোলা হবে।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test