E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জলবায়ু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প নমনীয়

২০১৬ নভেম্বর ২৩ ১২:৩৯:৩৫
জলবায়ু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প নমনীয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :নির্বাচনী প্রচারের সময় জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা জোর গলায় বলে এলেও ভোটে জিতে সুর পাল্টেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, প্যারিসসহ আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিষয়ে তিনি ‘খোলা মন’ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন।

রয়টার্স লিখেছে, ভোটের প্রচারে ট্রাম্প বারবারই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিলের কথা বলে এলেও তার নতুন অবস্থান আগের চেয়ে ‘নরম’।

জলবায়ু পরিবর্তনকে যিনি ‘ধাপ্পাবাজি’ বলেছিলেন, সেই ট্রাম্পই সাক্ষাৎকারে বলেছেন- মানুষের কার্যকলাপের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ‘কিছু সম্পর্ক’ আছে বলে তিনি মনে করেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম এক মাসে কী কী করবেন, তার একটি রূপরেখা ভোটের আগে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের যে অর্থ দেওয়ার কথা, সেই টাকা ট্রাম্প ব‌্যয় করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের অবকাঠামো সংস্কারে। এর মধ‌্য দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে তার।

এ মাসের শুরুতে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ট্রাম্পের ‘অন্তর্বর্তী’ দলের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিও রয়টার্সকে বলেছিলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসমর্থন তুলে নিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারেন ট্রাম্প।

মঙ্গলবার ওই বিষয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি খুব সুক্ষ্মভাবে ব্যাপারটা দেখছি। এ বিষয়ে আমি খোলা মনে ভাবছি।”

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনা; বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা প্রাণী ও উদ্ভিদ রক্ষা; খরা, বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে ২০১৫ সালে হওয়া প‌্যারিস চুক্তিতে দুইশ’র মত দেশ অনুসমর্থন দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন প্রত‌্যাহার করে নিলে প‌্যারিস উদ‌্যোগ মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ভোটের আগে তার যেসব প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছিল, তার অনেকগুলাতেই অবস্থান বদলের ইংগিত মিলেছে ইতোধ্যে।

ট্রাম্পের ‘অন্তর্বর্তী’ দল ইতোমধ‌্যে জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার এবং ক্লিনটন ফাউন্ডেশন নিয়ে আর কোনও তদন্ত চালাবে না নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের প্রশাসন।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, “আমি হিলারিকে আঘাত করতে চাই না, সত্যিই চাই না। এমনিতেই নানা ধরনের ভোগান্তির মধ‌্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে।”

ট্রাম্প যদি হিলারির বিরুদ্ধে ‘স্পেশাল প্রসিকিউটর’ নিয়োগ না করেন, তাহলে তিনি নির্বাচনী প্রচারে প্রায় প্রতিদিন করা একটি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসবেন। ওইসময় তিনি প্রায়ই উচ্চারণ করতেন ‘দুর্নীতিবাজ হিলারি’, সঙ্গে তার সমর্থকরা ধুয়ো তুলতেন- ‘তাকে জেলে পাঠাও’।

দায়িত্ব বুঝে নিয়ে প্রথম কোন পদক্ষেপ নেবেন সে বিষয়টি জানিয়ে সোমবার এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প ‘ট্রান্স প‌্যাসিফিক পার্টনারশিপ ট্রেড ডিল’ বাতিলের বিষয়ে আগের অনড় অবস্থানের কথাই বলেছেন। তবে স্বাস্থ‌্য কর্মসূচি ‘ওবামাকেয়ার’ বাতিল, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা কিংবা অভিবাসী বিতারণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিয়ে সেখানে কিছু বলা হয়নি।

সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি জলবায়ু পরিবর্তন এবং আমেরিকার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান নিয়ে ভাবছেন। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক চুক্তির কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলোর কত খরচ হবে- মূলত সেটাই তার ভাবনার বিষয়।





(ওএস/এস/নভেম্বর ২৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test