E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যুক্তরাষ্ট্র আ’ লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপসারণ দাবি

২০১৪ জুন ২৩ ১৫:০১:৩৬
যুক্তরাষ্ট্র আ’ লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপসারণ দাবি

ডেস্ক রির্পোট : আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল। আওয়ামী লীগের সাফল্যের মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা পাবে এটাই সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কামনা ও বাসনা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অবস্থান ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে সম্পৃক্ততা, রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ, রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানকে খাটো করা, সরকারের সাফল্যের সাথে জড়িত যে সকল প্রতিষ্ঠান ও তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বিশাদাগার দেশে ও বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছে।

এই জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এবং সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের অপসারণ দাবি করছি।
গত ২২ জুন বিকেলে ( নিউইয়র্ক সময়) প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। এই সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মেরাজ, কমান্ডার নূরন্নবী, শরাফ সরকার, ডা. মাসুদুল হাসান, খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, হীরু ভুইয়া, মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, রুহেল চৌধুরী, মোর্শেদা জামান, আবুল খায়ের, এ বি সিদ্দিকী, জি এইচ আরজু, শরিফ সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মূল্যবোধ ধারণ ও লালন করি। যুক্তরাষ্ট্রে এই চেতনা জাগ্রত রাখতে সদা সচেষ্ট। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শ সম্পূর্ণরূপে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাঙালির মুক্তিই আওয়ামী লীগের মূল দর্শন। জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সেই দর্শনের সকল বাস্তবায়ন হতে চলেছে। তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন এ সপ্তাহে (১৬ জুন) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ তাঁর সরকারি সফরের অংশ হিসাবে নিউইয়র্ক এলে তাঁকে সংবর্ধনা প্রদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা কমিটিতে আলবদর বাহিনীর কমান্ডার, জামাতী নেতা ও জামাতীদের বড় বড় পৃষ্ঠপোষক এবং স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়- প্রশ্রয়দাতা বিএনপির প্রতিক্রিয়াশীল একটি অংশের নেতাদের অন্তর্ভুক্তি দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি। রাষ্ট্রপতি নিজেও এ সংবাদ জেনে বিম্মিত হয়ে জামাত ও আলবদর বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত কমিটির আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এই সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত সেই আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধনা দেয়ার হেতু কী? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি রাষ্ট্রপতির চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন, দলের নীতি ও আদর্শের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আমরা মনে করি এটা ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আমরা ড. সিদ্দিকুর রহমানের কর্মকান্ডের নিন্দা জানাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করেছিলাম যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজের ভুল বুঝতে পারবেন এবং নিজের ব্যর্থতা উপলব্ধি করে দলকে বিপথে পরিচালনা থেকে বিরত থাকবেন এবং তার ব্যবর্থতা স্বীকার করে দলের নেতাকর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করে সঠিক পথে পরিচালিত হবেন। কিন্তু তিনি তা না করে নিজের সকল ব্যর্থতার দায় বিশেষ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোনের উপর চাপিয়ে নিজে মুক্ত থাকার উদ্দেশ্যে মিথ্যা সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার করে যাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন উপস্থাপন করে বলেন, রাষ্ট্রপতির বিতর্কিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে না যাওয়ার বিচক্ষণ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছেন বলে জনাব সিদ্দিক যে দাবি করেছেন তা কি রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠানকে খাটো করা হচ্ছে না? জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের স্থায়ী প্রতিনিধি যিনি অত্যন্ত পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন- তার সাফল্যে হিংসার বসবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে আপপ্রচার চালিয়ে এই সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছেন।
ড. প্রদীপ রঞ্জন আরো বলেন, জনাব সিদ্দিক প্রায়ই দলের হাইকমান্ডের নাম ব্যবহার করে দলের কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি ও ব্যক্তিগত সুবিধা আদায় করছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। তিন বছর আগে সিদ্দিকুর রহমানকে দলের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দলকে সুসংগঠিত না করে মাসের পর মাস বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং ব্যবসা- বাণিজ্য করছেন। তার অসাংগঠনিক কর্মকান্ডে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আজ নানাভাগে বিভক্ত।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল। আওয়ামী লীগের সাফল্যের মধ্যদিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা পাবে এটাই সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কামনা ও বাসনা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অবস্থান ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে সম্পৃক্ততা, রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ, রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানকে খাটো করা, সরকারের সাফল্যের সাথে জড়িত যে সকল প্রতিষ্ঠান ও তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বিশাদাগার দেশে ও বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছে। এই জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এবং সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের অপসারণ দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, গোলাম মোস্তফা খান মেরাজ, কমান্ডার নূরন্নবী ও শরাফ সরকার।

(এএস/জুন ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test