E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বাংলাদেশি খেদাও’ অভিযানে উত্তপ্ত নয়ডা

২০১৭ জুলাই ১৯ ১৩:২২:১৮
‘বাংলাদেশি খেদাও’ অভিযানে উত্তপ্ত নয়ডা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নয়ডার আবাসনের একটি পরিবার তাদের পরিচারিকা জোহরা বিবিকে সারারাত ঘরে আটকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এর জের ধরে বেশ কিছুদিন ধরেই পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ‘বাংলাদেশি খেদাও’ অভিযানে নেমেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ফলে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার থেকে নয়ডায় কাজ করতে যাওয়া প্রায় ৪০টি পরিবারকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পথে নামতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘু ও বাংলাভাষী হওয়ায় তাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এই অভিযানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা পুরোপুরি মদদ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে রাজ্যের মানুষদের এমন হেনস্থার অভিযোগ কানে যেতেই তৎপর হয়ে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূল সূত্রের খবরে জানানো হয়েছে, নির্যাতিত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলতে তৃণমূলের একটি মহিলা প্রতিনিধি দল পাঠানোর পাশাপাশি মমতা রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে বলেছেন পুরো ঘটনা তাকে বিস্তারিত ভাবে তাকে জানাতে। প্রয়োজনে সংসদে বিষয়টি নিয়ে সরব হতেও বলা হয়েছে ওই সাংসদকে। এ বিষয়ে মুখ খুলেছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও।

ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। নয়ডার একটি আবাসনের বাসিন্দা মিতুল শেট্টির বিরুদ্ধে তার পরিচারিকা জোহরা বিবিকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। পরের দিন সকালে জোহরার স্বামী স্ত্রীর খোঁজে আত্মীয় ও পড়শিদের নিয়ে এসে ভেতরে ঢুকতে চাইলে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ জানায় দু’পক্ষই।

শেট্টিরা জোহরার নামে ১০ দশ হাজার টাকা চুরি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জোহরার অভিযোগ, তাকে সারা রাত আটকে রেখে মারধরও করা হয়। সকালে সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান তিনি।

জোহরার অভিযোগের সত্যতা মানতে রাজি নয় উত্তরপ্রদেশের কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপি। তাদের দাবি, শুধু শেট্টি পরিবারের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রয়োজনে শেট্টি পরিবারের হয়ে আইনি লড়াই করার পক্ষে সওয়াল করেছেন স্থানীয় সাংসদ মহেশ শর্মা। তার দাবি, ‘এরা সকলেই কোথাকার তা ভাল করেই জানা আছে। কারণ আমি নিজেও নয়ডাতেই থাকি।’

মহেশের দাবি, হামলাকারীরা যাতে অন্তত এক বছর জামিন না পায় তার ব্যবস্থা করবেন তিনি।

ওই আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে প্রায় দু’হাজার। সেখানে কাজ করেন প্রায় ছ’শ পরিচারিকা। ওই ঘটনার পরে অর্ধেকের বেশি পরিচারিকাকে সেখানে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে ছোট ঝুপড়ি এবং খাবার দোকান।

খেটে খাওয়া মানুষগুলোর দাবি, তারা কুচবিহারের বাসিন্দা। ভোটার কার্ডও রয়েছে তাদের। এর আগে মদনলাল খুরানা যখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখনও এভাবে বাংলাদেশি তাড়াও অভিযানে নেমেছিল বিজেপি সরকার। বাংলাদেশি অভিযোগে বহু লোকের মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছিল। সেই ভয় আবার ফিরে আসছে খেটে খাওয়া বাঙালি পরিবারগুলোর মধ্যে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test