E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভারতে রবীন্দ্রনাথকে পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান

২০১৭ জুলাই ২৬ ১৪:৪২:২১
ভারতে রবীন্দ্রনাথকে পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্কুলের পাঠ্য পুস্তক থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সরিয়ে ফেলার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অনুসারী কট্টর ডানপন্থী রাষ্ট্রীয় স্বংয় সেবক (আরএসএস) ঘেঁষা ভারতের ‘শিক্ষা-সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস’ নামের একটি সংগঠন পাঠ্যসূচি থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছিল।

বুধবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়তাবাদের ওপরে মানবতাবাদের স্থান; এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেশটির সরকার শিক্ষা-সংস্কৃতি উত্থান ন্যাসের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

শিক্ষা-সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস আরএসএসের মতাদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষা সংশ্লিষ্ট একটি সংগঠন। এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা দিননাথ বাটরা ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ (এনসিইআরটি)-কে চিঠি দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছিলেন।

বুধবার রাজ্যসভায় রবীন্দ্রনাথ ইস্যুতে বিতর্কের জবাবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন, তার মন্ত্রণালয় এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

জাতীয়তাবাদী মনোভাবের সঙ্গে রবীন্দ্রচেতনা খাপ খায় না, এমন অভিযোগ তুলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কিত অংশ দশম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেয়ার দাবি তুলে এনসিইআরটি-কে চিঠি দেয়া হয়েছিল বলে আনন্দবাজার জানিয়েছে।

বিতর্কের মুখে ন্যাসের জাতীয় সম্পাদক অতুল কোঠারি জানান, ইতিহাস বা অন্য বিষয় পরিবর্তনের দাবি জানালেও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমে ন্যাসের নাম জড়িয়ে যা বলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।

মঙ্গলবার এই বিষয়টি সামনে আসার পর ন্যাসের সমালোচনা শুরু হয়। জল গড়ায় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যে বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ, তা ন্যাসকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই আজ বিবৃতি দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে ন্যাস।

রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি তোলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। এই সুপারিশ এসেছে কি না; সে বিতর্কে না ঢুকে জাভড়েকর বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্রনাথকে সম্মান করি। তার সঙ্গে সেই সব ব্যক্তিকেও, যারা লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতা এনেছিলেন। এ ধরনের কোনো কিছুই বাদ যাবে না।’

কেন এবং কীভাবে এই পরামর্শ এল, তার ব্যাখ্যায় জাভড়েকর জানান, এনসিইআরটি-র পাঠ্য পুস্তকে যদি কোনো ভুল থাকে তা হলে তা সংশোধনের জন্য শিক্ষক ও বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়ে পাঠায় মন্ত্রণালয়। এ রকম ৭০০ পরামর্শ জমা পড়েছে। সেগুলো খতিয়ে দেখার পর এ ব্যাপারে কিছু বলা সম্ভব।

শেষে তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায় এবং ডেরেক ও ব্রায়েন গীতাঞ্জলিসহ রবীন্দ্রনাথের ২২টি বই (ইংরেজি সংস্করণ) জাভড়েকরদের হাতে তুলে দেন। দীননাথকেও একটি বই দেয়ার জন্য ডেরেক পরে জাভড়েকরকে অনুরোধ করেন।

তবে তৃণমূলকে বিঁধে ধূপগুড়িতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘সিপিএম আমলে নোবেল চুরি হলেও ওরা উদ্ধার করতে পারেনি। ছয় বছরে পারেনি তৃণমূলও। অথচ, বিজেপি রবীন্দ্রনাথের লেখা তুলে দিতে চায়, এমন মিথ্যা বলে সংসদ গরম করছে ওরা। আমরা রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা করি। তার নামে বাজে রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test