E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাখাইনে আবারও সেনা অভিযান, বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা

২০১৭ আগস্ট ১৭ ১৩:২১:৫৬
রাখাইনে আবারও সেনা অভিযান, বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ও সামরিক স্থাপনা বাড়ানো হয়েছে। এর পর থেকে গত কয়েকদিনে শত শত রোহিঙ্গা আবারও বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন।

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, কমপক্ষে ৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে তাদের কঠিন যাত্রা শুরু করেছেন। এদের অনেকেই বলছেন, তারা নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাবিরোধী কয়েক মাসের কঠোর অভিযান পরিচালনা শুরু করে। সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন।

সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত এ অভিযানে রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা আবু তইয়ুব বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, তিনি পরিবারের সাত সদস্যসহ পালিয়ে এসেছেন। সেনাবাহিনী রাখাইনে তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে দিয়েছে, তরুণদেরকে গ্রেফতার করছে।

২৫ বছর তইয়ুব বলেন, ‘তারা আমার ছোট ভাইকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার দুই বছরের ছেলেকে লাথি মেড়ে আহত করেছে।’

দুই দেশের সীমান্তের নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন তিনি। তইয়ুব বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদেরসহ দ্রুত রাখাইন ছেড়েছি এবং দুই রাত আগে নাফ পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছি।’

ঢাকার পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, দেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র ও অস্থায়ী বসতিতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। কক্সবাজারের সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইনের সীমান্ত রয়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর এ সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। ওই সময় অন্তত ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ধর্ষণ, হত্যা ও রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করছেন বলে রোহিঙ্গা নেতারা দাবি করছেন।

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বলছে, নাফ নদীর অপর প্রান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশ বাড়ানোর খবরে তারা সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে।

রাখাইনের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সেখানে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ব্যাটালিয়ন পৌঁছানোর ঘটনায় গত সপ্তাহে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়ানঘি লি।

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইনে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বসবাস করে আসছেন কয়েক প্রজন্ম ধরে। এই রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেদেশের নাগরিকত্ব দেয়নি; উপেক্ষিত হচ্ছে তাদের মৌলিক মানবিক অধিকারের বিষয়ও। একই সঙ্গে তারা বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করে মিয়ানমারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে দাবি মিয়ানমারের।

এদিকে বাংলাদেশের দাবি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাসিন্দা। যেখানে পুলিশ প্রায়ই মাদক পাচারের মতো অপরাধের জন্য রোহিঙ্গাদের দোষারোপ করে।


(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test