E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণের খরচ দিতে চায় তুরস্ক

২০১৭ সেপ্টেম্বর ০২ ১৯:৪৭:০১
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণের খরচ দিতে চায় তুরস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ঈদ-উল-আযহার নামাজ শেষে ইস্তাম্বুলে বক্তৃতা দেয়ার সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাখাইনে গণহত্যা চলছে।

তিনি বলেন, ‘এ গণহত্যার ঘটনায় যারা গণতন্ত্রের আড়ালে চোখ বন্ধ করে রেখেছেন, তারাও এই গণহত্যার দোসর।’

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধানের অফিস থেকে শুক্রবার জানানো হয়, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে সহিংসতায় ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা মুসলিম।

রাখাইনে ব্যাপক গণহত্যা ও কৌশলে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এর ফলে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে রাখাইনে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর উত্তেজনা বাড়ছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখায় ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আটকা আছে। রাখাইনের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা করছেন তারা। জাতিসংঘ বলছে, রাখাইন থেকে পালিয়ে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে অন্তত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। নাফ নদে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ডুবে প্রাণহানি ঘটেছে আরো অনেকের।

চলতি মাসের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাস-সহ অন্যান্য মুসলিম নেতাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু বলছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু সীমান্ত খুলে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণের খরচও তুরস্ক দেবে বলে মন্তব্য করেছেন কাভুসোগলু।

বাংলাদেশে ৪ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ঢাকা বলছে, তারা আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে চায় না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরে ওআইসির বৈঠকে তুরস্ক একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করবে বলে জানান তুরস্কের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এই সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধান খুঁজব।

বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেও এবিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে মিয়ানমারকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, জাতিগত নিধনের শিকার রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা গত ২২ আগস্ট মিয়ানমার পুলিশের ৩১টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলা চালায়। এতে নিরাপত্তাবাহিনীর ১২ সদস্যসহ শতাধিক রোহিঙ্গার প্রাণহানি ঘটে। সশস্ত্র এই হামলার পর রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test