E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মানসিক দ্বন্ধ কিভাবে দুর করা যায় ?

২০১৪ মার্চ ১২ ১৫:৩২:৫২
মানসিক দ্বন্ধ কিভাবে দুর করা যায় ?

আজিজ রহমান: মানুষের নানা ধরনের সমস্যার মধ্য ‘দ্বন্ধ’-ও একটি সমস্যা । যে দ্বন্ধ তৈরী হয় নিজের সাথে নিজের, নিজেকে শত্রু বানিয়ে তোলা হয় অনেক সময়। এই দ্বন্ধের কারনে একটি সিদান্তে পৌচ্ছেতে অনেক সময় লাগে এবং মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে মানুষ । কিভাবে নিজের ভেতরকার দ্বন্ধ দুর করে একটি স্বচ্ছ জীবন লাভ করা যায় সেই বিষয়ে আজকে আলোচনা করবেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: মুহিত কামাল

দ্বন্ধ যে কারনে হয় : দ্বন্ধ তৈরী হয় মস্তিস্কের বির্ভ্রান্তিকর অবস্থার ফলে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় দ্বন্ধ হয়-আকর্ষন-আকর্ষন দ্বন্ধ। আকর্ষন-বিকর্ষন দ্বন্ধ। বিকর্ষন-আকর্ষন দ্বন্ধ ।বিকর্ষন-বিকর্ষন দ্বন্ধ। যেমন : একছেলে একটি মেয়েকে পছন্দ করে কিন্তু মেয়েটি তাকে পছন্দ করে না। একটা আকর্ষন-বিকর্ষন মধ্য পড়ে। মেয়েটা কেন পছন্দ করে না এটা সেই ছেলেটা মেনে নিতে পারেনা সে আবেগ দ্বারা-তাড়িত হয় এবং সমস্ত মেয়েদের উপর একটা নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসতে পারে কিন্তু এটা বাদ দিয়ে সে দ্বিতীয় চিন্তাটা করতে পারেনা যে জীবনে এর চেয়েও ভালো মানুষ তার জীবনে আসতে পারে। দ্বন্ধটা প্রচুর আবেগ প্রবনতার কারনে হয় –এখানে যুক্তি ও বাস্তবতা অনেক দুরে অবস্থান করে । সঙ্গ-দোষে দ্বন্ধ তৈরী হয়–অনেকদিন এক সাথে কোন অপরাধপ্রবণ লোকদের সাথে মিশলে তার ভেতরে দ্বন্ধ কাজ করে-দ্বন্ধ থেকে অপরাধের দিকে মোড় নেয়। দ্বন্ধটা উভয় সঙ্কটের ভেতর দিয়ে চলে। একজন মানুষ তার অপছন্দের পেশায় আছে শুধু বেকারত্বের ভয়ে সে –সেই পেশায় আছে অথাৎ দ্বন্ধটার মটিভ/উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করে ভয়, সঙ্কট, বিষন্নতাবোধ, একাকীত্ব, ভালো বন্ধুত্বের অভাব, শেয়ারিং এর অভাব, বিশ্বাসের জায়গা নষ্ট হওয়া ইত্যাদি দ্বন্ধের কারন হিসেবে বিবেচিত হয় ।

দ্বন্ধের কারণে যে ধরনের সমস্যা তৈরী হয়:

দ্বন্ধের কারনে স্মৃর্তি শক্তিতে সমস্যা তৈরী হয়। আবেগের পরিবর্তন হয়, চরিত্র ও আচরনের পরিবর্তন হয়। মানুষের বুদ্ধি-বৃদ্ধির ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে । দ্বন্ধের কারনে মানুষ অনেক পিছিয়ে যায় তার দৈনন্দিন কাজ থেকে । ব্যক্তি তার মতের পরিবর্তন ঘটায় ক্ষনে ক্ষনে যার ফলে তার ব্যক্তিত্ববোধেও আঘাত হানে । যেমন: ঢাকার একটা শীর্ষ-স্থানীয় কলেজের একছেলে –বাবা-মার ঝগড়ার কারনে ও রাগ করে ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়ে রমনা পার্কে বসে আছে এবং ছোট্ট একটা ঘটনায় ও এক বছর পিছিয়ে গেল । ওর বন্ধুরা যারা পাস করে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যাবে আর ও কলেজে থাকবে এটা থেকে ওর ভেতরে একটা দ্বন্ধ তৈরী হবে , সে দ্বন্ধের কারন হিসেবে নিজেকেই দোষারুপ করবে যার ফলে নিজের ভেতর একটা বিষন্নতাবোধ জন্মাবে ।

দ্বন্ধ সমাধানের উপায়:

EQ অথাৎ Emotional Quotient-টা খুব প্রয়োজন । আবেগ তাড়িত হয়ে কোন জিনিস করা যাবে না , যা করার ঠান্ডা মাথায় করতে হবে ।যার Emotional Quotient –উর্চ্চ পর্যায়, তার কোন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠে সুষ্ট চির্ন্তা করার ক্ষমতাও বেশি ।নিজেকে নিজের বিষয়ে ভাবতে হবে ।ভালো বন্ধু,পরিবার, শেয়ার-ডিসকাশন সব –সময় প্রয়োজনীয় । মানসিক দ্বন্ধে তাদেরই প্রথমে এগিয়ে আসা দরকার । কোন ভুল হয়ে গেলেও দোষারুপ না করে কিভাবে উত্তোরন সম্ভব সেটাই মুর্খ্য হওয়া প্রয়োজন ।দ্বন্ধ মানুষের ভেতর প্রথমাবস্থায় খুবই স্বাভাবিক থাকে ধীরে ধীরে এটি প্রকট আকার ধারন করে । এই মানুষিক দ্বন্ধের কারনে সঠিক সিদার্ন্ত না পৌচ্ছেয় জীবনের সমাপ্তি ঘটায় । তাই অবস্থা প্রকট আকাড় ধারন কারার আগেই একজন ভালো সাইকিয়াস্ট্রিট প্রয়োজন হয়ে পড়ে ।

সাইকিয়াস্ট্রিট-এর চিকিৎসা অনুযায়ী এই সব রোগীদের প্রথম দ্বন্ধ সনাক্ত করা হয় । সমস্যাটা কোন পর্যায় আছে তারপর কাউন্সিলিং করানো হয়, সাইকোথেরাপি নেয়া হয় , নিয়মিত হোমওয়ার্ক করতে হয় ও ঔষধ নিতে হয় ।

এছাড়া দ্বন্ধ সনাক্ত মেডিটেশনের মাধ্যমেও দ্বন্ধ দুর করা সম্ভব তবে দ্বন্ধের অবস্থা প্রকট থাকলে এ-ক্ষেত্রে মেডিটেশন থেকে মনোরোগের চিকিৎসাটাই বেশি প্রয়োজনীয় ।





(ওএস/অ/মার্চ ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test