E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

শতায়ু হওয়ার সহজ কৌশল

২০১৪ মে ১৪ ১৩:৫৫:৩০
শতায়ু হওয়ার সহজ কৌশল

স্টাফ রির্পোটার : এমন কে আছেন যিনি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে চান না? নিতান্তই মানসিকভাবে অসুস্থ ঝাড়া কেউই এমনটা চাইবেন না যে আমি যেন তাড়াতাড়ি মারা যাই। আমরা সবাই অনেকদিন বেঁচে থাকতে চাই। আর দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার জন্য চাই সুস্থ থাকা। সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন আমরা কতকিছু যে করার চেষ্টা করি তার ঠিক নেই। সুস্থ থাকার জন্য খুব কষ্ট করার কিছু নেই শুধু মেনে চলুন কিছু নিয়ম।

প্রাণ খুলে হাসুন
দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে প্রথমেই যে মূল্যবান কাজটি করতে হবে তা হল আপনাকে হাসতে হবে। আপনি হাসুন, প্রাণখুলে হাসুন। হাসি ওষুধের মত কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে রোয়িং মেশিনে মিনিট দশেক ব্যায়াম করলে হার্টের যে উপকার হয় চব্বিশ ঘন্টায় শ খানেক বার হাসলে সেই একই কাজ হয়। এজন্য হাসুন। মনে রাখবেন কোনো ঘটনার কারণে স্বাভাবিক হাসিতে যে উপকার, চেষ্টা করে হাসলেও সেই উপকার। হাসিতে শুধু হার্ট নয় সারা শরীরেরও নানা উপকার হয়।
ঘুমান
আপনি যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে চান তাহলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। ঘুম শরীরের অবসন্ন কাটিয়ে ফেলে। প্রতিদিন সাধারণভাবে ৮-৯ ঘন্টার ঘুম আমাদের দরকার। তবে আপনি যতটুকুই ঘুমাননা কেন খেয়াল রাখবেন ঘুমটা যেন গাঢ় হয়। ভালো ঘুমের জন্য কিছু ব্যায়াম করলে উপকারে আসতে পারে। তবে ভালো ঘুমের জন্য ঘুমের কয়েক ঘন্টা আগেই চা, কফি, সিগারেট খাওয়া বন্ধ করা উচিৎ। এছাড়া রাতে ভারী মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া চলবে না। ঘুমানোর আগে বেশি পরিশ্রম, উত্তেজনা ঠিক নয়। ঘুমের ওষুধ নিয়মিত খাওয়াও ক্ষতিকর। ঘুমাতে যাওয়ার একঘন্টা আগে দরকার হলে ক্যালসিয়াম-ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
খাবারে সচেতনতা
দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে সুস্থ থাকার জন্য খাবারের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করা উচিৎ। অর্থাৎ চর্বিযুক্ত খাবার বা রিচ ফুড বেশি খাবেন না, একেবারে না খেলে বেশি ভালো। ভিটামিন এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। প্রয়োজনে খাবারে কিছু নিয়ম মেনে চলুন।
বিটা ক্যারোটিন
প্রতিদিন একটা মিষ্টি আলু খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যেতে পারে। কারণ মিষ্টি আলুতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। বিটা ক্যারোটিন হল এ্যান্টি অক্সিডেন্ট। গবেষণায় দেখা গেছে বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার যারা বছর কুড়ি ধরে খাচ্ছেন তাদের ফুসফুস, মুখ, গলা, ত্বক, ব্রেস্ট ইত্যাদির ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া নিয়মিত বিটা ক্যারোটিন খেলে বয়স্কদের চোখে ছানি বা চোখের অন্যান্য সমস্যাও কম হয়। এছাড়া ত্বক ভালো থাকে, শ্বাসনালী পরিস্কার থাকে, হাড় ভালো থাকে। বিটা ক্যারোটিন যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায় কমলা, হলুদ, গাঢ় সবুজ বর্ণ শাক সবজিতে। কুমড়া, গাজর, মিষ্টি আলু, শাক, ফুলকপি, পিচ, অ্যাপ্রিকট, পাকা পেঁপে ইত্যাদিও বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার। যখনই সকাল-বিকেল-রাতের খাবার খাবেন দেখবেন যেন বিটা ক্যারোটিন আছে এমন শাকসবজি, ফল খাবেন। মনে রাখবেন বিটা ক্যারোটিনে আছে যেকোনো রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা।
ফাইবার
নিয়মিত পেট পরিস্কার না হওয়া শরীরে অনেক রোগের কারণ। প্রতিদিন যেন পেট পরিস্কার হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখুন। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে ফাইবার। শাকসব্জি, ফলের যে অংশটা হজম করা যায় না সেটাই হল ফাইবার। এটা হজম না হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় অন্য বর্জ্য পদার্থ সঙ্গে নিয়ে। তাই পেট পরিস্কার রাখায় ফাইবারের উপকারিতা খুব এবং পেট পরিস্কার থাকলে অনেক অসুখ থেকেই রেহাই পাওয়া যায়। এর জন্য কলে ছাটা চাল আর মিহি আটা না খেয়ে ঢেঁকিছাটা চাল এবং ভুসিযুক্ত আটা খাবেন। দিনে বার তিনেক খোসাসুদ্ধ ফল খান। সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে টাটকা শাকসবজি খাবেন।
ক্যালসিয়াম
দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে হাড়, দাঁত শক্ত আর মজবুত করার জন্য ক্যালসিয়াম অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখুন। হাড়ের ক্ষয় পূরণ ও বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন আমাদের প্রয়োজন পড়ে ৬০০-৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। খাবারের চর্বি এবং প্রোটিন ভেঙ্গে ফেলায় যেসব এনজাইম কাজ করে তাদের সাহায্যে লাগে ক্যালসিয়াম। নার্ভাস সিস্টেম ঠিক রাখার জন্যও ক্যালসিয়াম দরকার। ক্যালসিয়াম রক্ত জমাট বাঁধায় সাহায্য করে, ফ্যাট এবং প্রোটিন হজমে সাহায্য করে, শরীরের পেশির কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম পাবেন দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে, সিট্রাস ফলে। প্রয়াজনে ক্যালসিয়াম সাপিস্নমেন্ট হিসেবে প্রতিদিন গ্রহণ করুন।
ফলের রস গ্রহণ করুন
শারীরিক শক্তি যোগাতে এবং বিভিন্ন পুষ্টি পূরণে অবশ্যই প্রতিদিন কোনো না কোনো ফলের রস গ্রহণ করুন। এর ফলে আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন এবং দীর্ঘজীবন লাভ করবেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
মাঝে মধ্যে রক্তচাপ এদিক সেদিক হতেই পারে কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ বা উচ্চ রক্তচাপ ভালো জিনিস নয় একেবারেই। এর জন্য কাঁচা লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে উত্তেজনা এড়িয়ে চলুন। রাগ-বিরক্তি প্রকাশে সংযত হন। দিনে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট মেডিটেশন করুন কেননা উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে রিলাক্সেশন খুব উপকারী।
ধূমপান ছেড়ে দিন
আপনি যদি ধূমপায়ী হন আর দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই ধূমপান ছেড়ে দেন। এটা নিঃসন্দেহে আপনার আয়ু কমিয়ে ফেলে। আপনার দেহে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। ফলে আপনার দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার ইচ্ছা একেবারেই মাটি করে দেবে।
ব্যায়াম করুন
ব্যায়ার শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে। ব্যায়ামের ফলে শারীরিক গঠন ঠিক থাকে। শরীরে কোনো ধরনের রোগ দেখা দেয় না। ব্যায়াম করলে শারীরিক প্রশান্তি মিলবে, ঘুম ভালো হবে। ফলে আপনার আয়ুও কিছুটা বেড়ে যাবে।
মেডিটেশন করুন
মেডিটেশন করলে মানসিক প্রশান্তি মেলে। আমরা হয়ত অনেক সময় মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কোনো কাজে মন বসাতে পারি না। মানসিক বিস্মৃতিতে ভুগি। এর জন্য মেডিটেশনের বিকল্প নেই। মেডিটেশন আমাদের মস্তিষ্কের যত স্ট্রেস সব নির্মূল করে নতুনভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। এর ফলে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন । ফলে দীর্ঘজীবন লাভ করবেন।
(ওএস/এএস/মে ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test