E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রোজার আগাম প্রস্তুতি

২০১৪ জুন ২৮ ১৪:১৭:১৯
রোজার আগাম প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক : দেখতে দেখতে আবার রোজা চলে এলো। মুসলমানদের জন্য সিয়াম সাধনার মাস এটি। বছরের অন্য মাসগুলো থেকে এটি একটু ভিন্ন। এ মাসে চলাফেরা, খাবার-দাবার এমনকি পোশাক-আশাকেও আসে বেশ পরিবর্তন। তাই ঘরে-বাইরে সব জায়গায় দৈনন্দিন রুটিন একেবারেই বদলে যায়। এর জন্য প্রয়োজন আগে থেকে প্রস্তুতি। তা না হলে এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হবে। তাই অনেক নিয়ম মেনে চলা উচিত এ সময়।

বাজেট প্রস্তুতি : এ সময় বাজারের খরচটা একটু বেড়ে যায়। তাই আগেই একটু হিসাব কষে নিন। রোজার বাজারের একটি লিস্ট করে ফেলুন। এক মাসে কী পরিমাণ বাজার লাগতে পারে তা দেখে নিন। কারণ একবারে বাজার করলে কিছুটা কমে পেতে পারেন। বাসায় বয়স্ক ব্যক্তি থাকলে তার কথাও মাথায় রেখে লিস্ট করুন। কারণ তার খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন হতে পারে।


খাবার : নিয়মতান্ত্রিক জীবন থেকে সরে এসে আর একটি নতুন রুটিন মানা হয়। তাই সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়া উচিত খাবারের প্রতি। সারাদিন না খেয়ে থাকতে হয়। ভোররাতে সেহরি আর দীর্ঘ সময় পর ইফতারি। এই ইফতার বা সেহরিতে ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া ভালো। রোজা রাখার পর শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সুষম খাবার খেতে হবে। শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অনেকে সেহরি এবং ইফতার করেন; কিন্তু রাতের খাবার খান না। এটা ঠিক নয়, সব খাবারই সমান পরিমাণে খেতে হবে। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের জন্য পানিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি দরকার। সারাদিন রোজা থাকা হয়, তাই বাকি সময় পানির এ অভাবটা পূরণ করতে হয়। ইফতারের সময় খেজুর হতে পারে ইফতারের একটি অন্যতম খাবার। কারণ খেজুর হচ্ছে চিনি, ফাইবার, শর্করা, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের অন্যতম উৎস। ২-৩টা খেজুরই শরীরকে চাঙ্গা করতে পারে। ঠাণ্ডা পানি বা লেবুর শরবত বেশ উপকারী। বাজারের বিভিন্ন প্যাকেট বা বোতলজাত উপকরণ দিয়ে শরবত না বানানোই ভালো। এ ছাড়া ভিজানো চিড়ায় সামান্য চিনি মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বেল বা দই দিয়ে তৈরি শরবতও শরীরের জন্য উপকারী। ডাবের পানি পান করতে পারলে ভালো। যে কোনো ফল ইফতারে খেতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ইফতারে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না। শরবতের বদলে পাতলা দুধ বা পরিমিত ডাবের পানি খেতে পারেন। তেমনি সেহরিতেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। কারণ শর্করা জাতীয় খাবার হজম হতে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে দিনের বেলা খিদে কম অনুভূত হয়। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ভাত, আটা ও ময়দা। এর সঙ্গে মাছ বা মাংস ও সবজি খেতে পারেন। এ ছাড়া রয়েছে রান্না করা ডিম, ডাল ও দুধ। আর বেশি করে পানি পান করতে হবে। সন্ধ্যা রাতের খাবার হালকা হওয়াই ভালো। এতে সেহরি খাওয়ার ইচ্ছাও বজায় থাকবে পুরোপুরি। ইফতারিতে ডালের সমারোহ বেশি থাকে বলে যথেষ্ট প্রোটিন পাওয়া যায়। এ জন্য সন্ধ্যা রাতের খাবারে ডাল বাদ দিলে ভালো হয়। মাংসের চেয়ে হালকা মসলাসহ যে কোনো বড়-ছোট মাছ খেলে ভালো হয়। যে কোনো ধরনের ভর্তা খেলেও খাবারে রুচি আসবে।


বাইরে যখন : সবকিছু কম হলেও কাজের পরিমাণ কমে না। কাজের চাপ থাকে একই রকম। কাজটিও তাই করতে হবে রুটিনমাফিক। রোজায় অফিসের সময় এমনিতেই খানিকটা কমে যায়। এরপর যদি অফিসে দেরি হয়, তাহলে কাজের চাপ সামলানো মুশকিল হয়। তাই অফিসে যেন দেরি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকুন। রোজার মাসে লাঞ্চের সময়টা কাজে লাগান। পুরনো কোনো কাজ জমা থাকলে সেরে ফেলুন। একইভাবে চা-বিরতির সময়টাও কাজে লাগান। অফিসে কোনো মিটিং থাকলে তা দিনের প্রথমার্ধে শেষ করার চেষ্টা করুন। অফিস থেকে বাড়ির দূরত্ব যা-ই হোক, ইফতারের অজুহাতে নির্দিষ্ট সময়ের আগে অফিস থেকে বের হবেন না।


কর্মব্যস্ত নারী : চাকরিজীবী নারীদের একটু বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়। অফিস সামলে বাসায় ফিরেই ইফতারের আয়োজন। এরপর আবার সেহরির প্রস্তুতি। চাকরিজীবী নারীরা ছুটির দিনের সময়টা কাজে লাগাতে পারেন। ফ্রিজে পেঁয়াজ, আলু, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা বেশ খানিকটা কেটে রাখতে পারেন। মসলা বেটে ফ্রিজে রাখুন পুরো সপ্তাহের জন্য। মাছ ধুয়ে লবণ ও হলুদ মেখে জিপলক ব্যাগে ডিপে রাখুন। মুরগি ধুয়ে পরিষ্কার করে টুকরো করে রাখুন। তবে গরু বা খাসির মাংস না ধুয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে রক্ত মুছে এরপর জিপলক ব্যাগে ডিপে রাখুন। ইফতারের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে প্রস্তুত করা শুরু করুন। গৃহিণীরা দিনের শুরুতে এবং কর্মজীবীরা রাতেই ইফতারের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। সময় বাঁচাতে চার-পাঁচ দিনের ছোলা একসঙ্গে সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখুন। ইফতারের দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে রান্না করে নিন। পেঁয়াজুর ডালও খানিকটা বেটে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। শরবত, লাচ্ছি, রায়তা ইত্যাদি আগেই তৈরি করে ফ্রিজে রাখুন। ইফতারি শুরুর অন্তত ১০ মিনিট আগে টেবিলে সব খাবার সাজিয়ে ফেলুন। রোজায় যেহেতু ভোররাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। তাই রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করে শুয়ে পড়ুন।

(ওএস/এএস/জুন ২৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test