E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লন্ডনে প্রদীপ প্রজ্বলন : ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দাবি

২০১৮ মার্চ ২৭ ১৪:৩৮:২৪
লন্ডনে প্রদীপ প্রজ্বলন : ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দাবি

লন্ডন : জাতীয় গণহত্যা দিবসে লন্ডনে আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্বলন অনুষ্ঠানের বক্তারা বলেছেন, ‘মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত।’ তাদের মতে, যে ঘটনাগুলো মানব সভ্যতার কলঙ্কতীলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে সেগুলোর অন্যতম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যা। এটি ইতিহাসের নৃশংসতম কালো অধ্যায়।

২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রবিবার রাত ৯টায় পূর্ব লন্ডনের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘শুধিতে হবে জন্মের ঋণ, চলে এসো আলোর মিছিলে’ শীর্ষক এই প্রদীপ প্রজ্বলন অনুষ্ঠানে বিলেতের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

যুক্তরাজ্য নির্মূল কমিটির উপদেষ্ঠা মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবু মুসা হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই ‘আলো’র সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) পরিচালক ড. সেলিম জাহান।

বক্তব্য রাখেন কবি, কলামিষ্ট শামীম আজাদ, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা, জয়েন্ট কাউন্সিল ফর দ্যা ওয়েলফেয়ার অফ ইমিগ্রেন্টসের প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী হাবিব রহমান, যুক্তরাজ্য জাসদের সভাপতি হারুনুর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেইন, যুক্তরাজ্য উদীচীর সভাপতি হারুনুর রশীদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনসার আহমেদ উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল খান ও গণজাগরণ মঞ্চের অজন্তা দেব রায় প্রমুখ।

নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, উদীচীর সাবেক সভাপতি রফিকুল হাসান খান জিন্নাহ, শিক্ষাবিদ সৈয়দ রকিব, সাংবাদিক জুয়েল রাজ, সংস্কৃতিকর্মী অসীম চক্রবর্তী, এডভোকেট ইউসুফ শেখ, সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী ও ইমরান আহমেদ, নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার ট্রেজারার শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল, যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেইন ও ছড়াকার সৈয়দ হিলাল সাইফ প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সেলিম জাহান বলেন, মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই একাত্তরের ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া উচিত। তিনি বলেন, সমাজ, রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক অঙ্গন সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে জনগনের সম্মিলিত শক্তি ‘জনমত’। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও নিশ্চয়ই সেই জনমত’র বাইরে নয়। আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দাবীতে প্রয়োজনে বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বে বসবাসরত বাঙালিদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহের কর্মসূচী আয়োজনের প্রস্তাবনা রেখে ইউএনডিপি’র এ কর্মকর্তা বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠির দেশ বাংলাদেশ থেকে এদাবীর পক্ষে ৬/৭ লক্ষ স্বাক্ষর সংগ্রহ নিশ্চয়ই অসম্ভব কিছু নয়।

কবি শামীম আজাদ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আদায়ের আন্দোলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিরামহীন আন্দোলনের প্রশংসা করে বলেন, এই বিলেতেও এই আন্দোলনের স্থায়ী ঠিকানা আলতাব আলী পার্কের এই শহীদ মিনার। এখানে আসলে, হতাশামুক্ত হই, নতুন করে আশায় বুক বেধে ঘরে ফিরি।

তিনি বলেন, শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কার্যকর ও ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের পর নির্মূল কমিটিসহ দেশবাসী এবার নেমেছে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে। বরাবরের মত এখনও আছি এই আন্দোলনে।

সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে লন্ডন হতে পারে অন্যতম ক্যাম্পেইন পয়েন্ট। বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্র এখানে যদি এই দাবিটি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়া যায় তাহলে বিশ্ববাসীর নজরে আসা যাবে সহজেই।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান যার যার হাতের আলো নিভিয়ে ফেলার আহবান জানিয়ে বলেন, একাত্তরের শহীদদের স্মরণে এই আলো সাময়িক নিভিয়ে ফেললেও আলোর এই মিছিল নিয়েই আমরা ভেদ করতে চাই সমাজের সব অন্ধকার রাস্তাগুলো। আলো হাতে অন্ধকার অতিক্রম করার এই প্রেরণা একাত্তরের শহীদরাই আমাদের দিয়ে গেছেন। আজকের এই দিনে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি তাদের।

তিনি বলেন, ২৫ মার্চ ছিলো কালোরাত। কিন্তু একাত্তরের পর থেকে প্রতি বছর আমরা এ রাতটিকে আলোয় ভরিয়ে দেই।

(বিজ্ঞপ্তি/এসপি/মার্চ ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test