E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে তালেবান সন্দেহে বাংলাদেশি যুবক গ্রেফতার

২০১৯ জুলাই ২৮ ১৫:৩৫:৫০
নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে তালেবান সন্দেহে বাংলাদেশি যুবক গ্রেফতার

প্রবাস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ম্যানহাটন পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে বাংলাদেশি আকায়েদ উল্লাহর বোমা হামলাকারী হিসেবে গ্রেফতার ঘটনার পর এবার তালেবান সন্দেহে দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন (৩৩) নামে বাংলাদেশি যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। স্থানীয় সময় ২৬ জুলাই শুক্রবার সকালে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এফবিআই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)। বাংলা প্রেস।

জানা যায়, দেলোয়ার মোহাম্মদ যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য বাহিনীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তালেবানের সঙ্গে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে চেষ্টা করছিল। তিনি নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে বস্তুগত সহায়তা প্রচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। থাইল্যান্ডগামী একটি ফ্লাইট হয়ে চূড়ান্ত গন্তব্য আফগানিস্তানে পৌঁছানোর টার্গেট ছিল তার।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, তালেবানের হয়ে আফগানিস্তানে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য বাহিনীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে চেয়েছিল সে।

২৬ জুলাই শুক্রবার বিকালে তাকে ম্যানহাটনের আদালতে তোলা হয়। এ সময় জামিন না দিয়ে তাকে আটক রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

এফবিআই এবং নিউ ইয়র্ক পুলিশ একটি ভালো কাজ করেছে যে, বিমান উড্ডয়নের আগেই ওই ব্যক্তির তালেবানের সঙ্গে যোগ দেওয়ার মারাত্মক পরিকল্পনা তারা বানচাল করে দিয়েছে। এ ঘটনায় দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইনের সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে ধারনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ফর দ্য সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউ ইয়র্ক জিওফ্রে এস বারম্যান।

আদালতে দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই তালেবানে যোগদানের পরিকল্পনা করছিল দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন। সে এফবিআই-এর নিয়মিত নজরদারির অধীনে ছিলেন।
আদালতে অভিযুক্ত সম্পর্কে বলা হয়েছে, দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানে যেতে এফবিআই-এর একটি গোপনীয় উৎসে যোগাযোগ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশি আফগানিস্তানে প্রবেশের ইচ্ছা ছিল তার।

ছদ্মবেশী এক এফবিআই এজেন্টকে দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল। ওই এজেন্টকে সে বলেছিল, মৃত্যুর আগে আমি কিছু কাফেরকে হত্যা করতে চাই।

তার পরিকল্পনার যেন কেউ আঁচ করতে না পারে সেজন্য সে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা সম্পর্কেও ওই এফবিআই এজেন্টকে জানিয়েছিল সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে থাইল্যান্ড, এরপর পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছাতে চেয়েছিল সে।

আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন আফগানিস্তানে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছে। সে ওয়াকিটকি এবং ট্র্যাকিং গিয়ারের মতো সরঞ্জামও কিনেছে। এছাড়া অর্থ বাঁচাতে আফগানিস্তানে পৌঁছার পরপরই অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা ছিল তার।

দেলোয়ার মোহাম্মদ হোসাইন ছদ্মবেশী এফবিআই এজেন্টকে বলেছে, মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলা বৈধ। কেননা পুরো দুনিয়া আমেরিকান সরকারের বিরুদ্ধে, দেশটির জনগণের বিরুদ্ধে নয়। তবে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর জন্য আপনার একাই চার-পাঁচজনেরও বেশি মানুষের শক্তির প্রয়োজন হবে। তার এমন বক্তব্যের রেকর্ড আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর সকালে অফিসগামী যাত্রীদের ভীড়ে টাইম স্কয়ার সাবওয়ে স্টেশন থেকে ম্যানহাটনের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে যাওয়ার ভূগর্ভস্থ পথে বিস্ফোরণ ঘটান বাংলাদেশি আকায়েদ উল্লাহ। তিনি নিজের শরীরে 'পাইপ বোমা' বেঁধে নিয়েছিলেন। কিন্তু বোমাটি ঠিকমত বিস্ফোরিত হয়নি। এতে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তবে গুরুতর আহত হয়েছেন। আতহ অবস্থায় পুলিশ তাকে আটক করে।

এ বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন আরো তিন পুলিশ সদস্য। পরে নিউ ইয়র্ক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে এ হামলা চালান।

(পিআর/এসপি/জুলাই ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test