E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

করোনা : যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মিছিলে ৭৭ হাজার মানুষ

২০২০ মে ১০ ১৩:২৬:১৫
করোনা : যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মিছিলে ৭৭ হাজার মানুষ

প্রবাস ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ও মৃতু্য বাড়ছেই। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটারের' তথ্যমতে, দেশটিতে এরই মধ্যে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ৭৭ হাজার মানুষ। মোট আক্রান্ত ১৩ লাখের বেশি। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে দুই লাখের বেশি। এরই মধ্যে আরও এক আতঙ্কের কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তাদের বক্তব্য, নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা না গেলে যুক্তরাষ্ট্রে এই মহামারি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ফলে ট্রাম্প প্রশাসন দ্রম্নত লকডাউন তোলার যে পরিকল্পনা করছে, তাতে বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্য নিউ ইয়র্কের অবস্থা এখনো ভয়াবহ। হাসপাতালে নতুন রোগী নেওয়ার কার্যত কোনো জায়গা নেই। পাওয়া যাচ্ছে না মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গাও। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো লকডাউন তুলে জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর পক্ষপাতী। তিনি আগেই বলেছিলেন, 'দিনের পর দিন এভাবে সব কিছু বন্ধ করে বসে থাকা সম্ভব নয়। অর্থনীতিকে সচল করতেই হবে।' যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করে দিলে মৃতের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। বাড়বে আক্রান্তও। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। 'হতাশার মৃত্যু' ঝুঁকিতে ৭৫ হাজার মার্কিনি।

এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তৈরি হওয়া হতাশায় ওষুধ কিংবা অ্যালকোহলের অপব্যবহার এবং আত্মহত্যায় ৭৫ হাজার মার্কিনির মৃত্যু হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের 'ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ গ্রুপ ওয়েল বিং ট্রাস্ট'র বিশ্লেষণে এ আশঙ্কার কথা উলেস্নখ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে কয়েক মাস ধরে লকডাউন চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাতে বেকারত্ব, অর্থনৈতিক স্থবিরতা, আইসোলেশনের কারণে একাকিত্ব ও মহমারি শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা 'হতাশার মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। স্থানীয়, অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এই মৃত্যুর মিছিল থামানো সম্ভব বলে শুক্রবার প্রকাশিত নতুন রিপোর্টে বলেছেন গবেষকরা।

ওয়েল বিং ট্রাস্টের প্রধান স্ট্র্যাটেজি অফিসার ডা. বেঞ্জামিন এফ মিলার বলেন, 'উচ্চমানের মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা ও সম্প্রদায়ের সমর্থনের উন্নয়নে আমরা যতক্ষণ সমন্বিতভাবে ফেডারেল, অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় সংস্থান না পাচ্ছি, ততক্ষণ আমার দুশ্চিন্তা হয়তো ওষুধ কিংবা অ্যালকোহলের অপব্যবহার এবং আত্মহত্যার কারণে আমাদের অনেক বাজে পরিস্থিতি দেখতে হবে।' সংস্থাটি একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে গত কয়েক বছরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও কাউন্টি পর্যায়ে এ ধরনের মৃত্যুর চিত্র ফুটে উঠেছে। কোভিড-১৯ রোগের কারণে তৈরি হওয়া বেকারত্ব, আইসোলেশন ও অনিশ্চয়তায় এবার তা ছাপিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। মহামারির কারণে যারা চাকরি হারিয়েছে, তাদের চাকরি খুঁজে দিতে স্থানীয়, অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। বিশ্বব্যাপী মৃতু্য দুই লাখ ৭২ হাজার ছাড়িয়েছে।

অন্যদিকে, ইউরোপের পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলেও রাশিয়ায় নতুন করে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জার্মানি এবং ফ্রান্সকে টপকে রাশিয়া এখন পঞ্চম বৃহত্তম করোনা আক্রান্ত দেশ। মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৮৮ হাজার। গত চার দিনে রেকর্ড সংখ্যক রোগী বেড়েছে। একেক দিন আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ১৭০০ ছাড়িয়েছে। করোনার প্রকোপ যত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি ততই সংকটজনক চেহারা নিচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর তৃতীয় শক্তিশালী দেশ জাপানে গভীর মন্দা শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আপাতত এই সংকট কাটার কোনো সম্ভাবনা নেই। একগুচ্ছ খারাপ খবরের মধ্যে সামান্য সুসংবাদ অস্ট্রেলিয়ায়। দেশটির সরকার ঠিক করেছে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ধীরে ধীরে লকডাউন পুরোপুরি তুলে নেবে। তবে সামাজিক দূরত্বের মতো কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৭২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে ৩৯ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে। আর আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।

(বিপি/এসপি/মে ১০, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test