E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লুইসভিলে সান্ধ্য আইন ভেঙ্গে রাস্তায় নেমেছে হাজারো বিক্ষোভকারী

২০২০ সেপ্টেম্বর ২৫ ২৩:৪৩:৩০
লুইসভিলে সান্ধ্য আইন ভেঙ্গে রাস্তায় নেমেছে হাজারো বিক্ষোভকারী

প্রবাস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিলে সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছে। এদের অনেকেই রাতভর স্থানীয় একটি গির্জার প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছিল। কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে হত্যার অভিযোগ থেকে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদে দ্বিতীয় তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে। সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বৃহস্পতিবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়েছেন।মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

ব্রিওনা টেলর নামের ওই কৃষ্ণাঙ্গ নারী লুইসভিল শহরের বাসিন্দা ছিলেন। পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী টেলরের বাসায় গত ১৩ মার্চ ভোরে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের গুলিতে মারা যান টেলর। ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্র্যান্ড জুরি বুধবার জানিয়ে দেন, ওই অভিযানে যাওয়া তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে না। এরপরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে লুইসভিলসহ বিভিন্ন শহরে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে বুধবার লুইসভিলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের। রাতে জারি করা হয় কারফিউ। তা উপেক্ষা করে রাস্তায় ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। বুধবারের ধারাবাহিকতায় বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবারও রাস্তায় নামেন। কারফিউ উপেক্ষা করে তাঁরা সন্ধ্যার পর লুইসভিল শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হন। অনেকেই রাতভর স্থানীয় একটি গির্জার প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভকারী মাইকেল পাইলস বলেন, ‘আমরা কোনোমতেই আর শান্ত থাকতে পারি না।’ ২৯ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের কাছে ছিল নাইনএমএম হ্যান্ডগান। বললেন, ‘আমরা রাস্তায় নেমেছি আমাদের লোকজনকে এবং আমাদের যাঁরা সমর্থন করেন, তাঁদের রক্ষা করার জন্য। আমরা আক্রান্ত হয়েছি।’

১৯ বছরের তরুণী গ্রেস পেনিক্স আফ্রিকান-আমেরিকান। তিনি নিজেকে নিহত ব্রিওনা টেলরের জায়গায় নিয়ে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করতে চান। বললেন, ‘আমি প্রায়ই বাসার সদর দরজার পাশ দিয়ে যাই আর ভাবি, এই বুঝি পুলিশ এল। গুলি করে আমাকে হত্যা করল। ঠিক যেভাবে ব্রিওনা টেলরকে হত্যা করা হয়েছে। হতে পারে এটা আমি, আমার কোনো বন্ধু, চাচাতো ভাইবোন, চাচি বা মা, যে কেউ।’

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড খুন হন। ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। টেলরের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গ্র্যান্ড জুরির এই সিদ্ধান্ত তাতে ঘি ঢেলেছে। বিক্ষোভকারীরা বর্ণবাদের ইতি ঘটিয়ে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।

বুধবার রাতের বিক্ষোভের সময় গুলিতে আহত দুই পুলিশের একজন হাসপাতাল ছেড়েছেন। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছিল। অন্যজনের পেটে গুলি লাগে। ইতিমধ্যে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনিও সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করা হচ্ছে। লুইসভিলে অন্তত আগামী রোববার পর্যন্ত রাত নয়টা থেকে ভোর সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত থাকবে। শহরের কেন্দ্রস্থলের বেশির ভাগ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে অনেক দোকানপাটও।

এদিকে, নিহত ব্রিওনা টেলরের পরিবারের নিযুক্ত আইনজীবী বেন ক্রাম্প বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্ট-এ একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্তের পেছনে ‘বর্ণবাদের শয়তান’ আছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বেন ক্রাম্প লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠাকারীরা সবার জন্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কৃষ্ণাঙ্গ লোকজনের জন্য সেটা নিশ্চিত করতে না পারব এবং বর্ণবাদের শয়তানের তাণ্ডবের ইতি ঘটাতে না পারব, ততক্ষণ আমরা শান্তি কী জিনিস তা জানতে পারব না।’

(বিপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test