E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাস, দুশ্চিন্তায় অনেকে

২০২১ আগস্ট ২৮ ১৭:৫৭:২৩
অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাস, দুশ্চিন্তায় অনেকে

সুরঞ্জিত বিশ্বাস সুমন, সিডনি : স্থিতিশীল ও উন্মুক্ত অর্থনীতির দেশেগুলোতে স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা কার না থাকে! আর সেই দেশটা যদি হয় অস্ট্রেলিয়া, তাহলে তো কথাই নেই। তাইতো অস্ট্রেলিয়াকে বলা হয় অভিবাসনের দেশ। 

ধরা হয়, ১৭৮৮ সাল থেকেই মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন নিতে থাকে। ১৯৪৫ সাল থেকে ৭ মিলিয়ন মানুষ অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। ১৯৯২-১৯৯৩ সালে প্রায় ৩০ হাজার এবং ২০১৫-২০১৬ সালে ১ লাখ ৭৮ হাজারের মত মানুষ অভিবাসী হিসেবে অস্ট্রেলিয়া যান। অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। তার প্রধান কারণ ছিল সহজ অভিবাসন নীতি ও নিরাপত্তার চাদরে মোড়া তাই। সূত্র: https://immi.homeaffairs.gov.au/what-we-do/migration-program-planning-levels

তবে এখন অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন অনেকটা কঠিন করায় দিন দিন সবাই পছন্দের তালিকা থেকে পিছিয়ে পড়ছে এই দেশটি। গড়ে প্রতি তিন মিনিটে একজন করে অস্ট্রেলিয়ায় পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পাচ্ছেন। অন্যদিকে বছরে ৪০,০০০ আবেদন প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। যার কারণ অস্ট্রেলিয়ার কঠোর অভিবাসন প্রক্রিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন, যার সঙ্গে যুক্ত ভিসা পাওয়া এবং তারপর রেসিডেন্সি পেতে অনেক ধরণের চেক এবং ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এমপ্লয়ার-স্পনসরড ভিসা, গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা এবং বিজনেস ইনোভেশন অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম ভিসাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। এবং বিজনেস ভিসায় ১৩ হাজার ৫০০ আবেদন গ্রহণ করবে সরকার। আর গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসায় আবেদন করতে পারবেন প্রায় ১৫ হাজার ভিসাপ্রার্থী। তবে সব ভিসার ক্ষেত্রেই অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানকারী আবেদনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া দেশটির আঞ্চলিক শহরের আবেদনকারীদেরও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা রয়েছে। সিডনি বা মেলবোর্নের মতো স্টেটে বসবাসকারী এবং অস্ট্রেলিয়ার বাইরের আবেদনকারীরা কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় জনপ্রিয় বিষয় ও পেশা অ্যাকাউন্ট্যান্টে অভিবাসন প্রক্রিয়া পড়েছে ভাটা। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে এসেছে ৭ লাখের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। যার মধ্যে অ্যাকাউন্টিং বিষয় জনপ্রিয়তায় তৃতীয়। প্রায় ২০ বছর ধরে দেশটির দক্ষ পেশার তালিকায় শীর্ষস্থানীয় একটি পেশা অ্যাকাউন্ট্যান্ট। গত ৩ বছরে প্রায় ৭ হাজার অ্যাকাউন্ট্যান্ট দক্ষ পেশাদার হিসেবে অভিবাসন নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

তবে দেশটির আর্থসামাজিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিবছরই অভিবাসন আইনে নানা পরিবর্তন আসে। পাশাপাশি কোন পেশায় কতজন অস্ট্রেলিয়ায় ভিসা পাবেন, এরও একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা করা হয়। এ বছরের দক্ষ পেশার তালিকায় পিছিয়ে পড়েছে দেশটির জনপ্রিয় পেশা অ্যাকাউন্ট্যান্ট। একই সঙ্গে পয়েন্ট টেস্টভিত্তিক ভিসাগুলোয় বাড়তি পয়েন্টও প্রয়োজন পড়বে অ্যাকাউন্ট্যান্ট পেশাদারদের। আবার অন্যান্য পেশায় যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকই স্থায়ী অভিবাসনের জন্য ছুটছে এক স্টেট থেকে অন্য স্টেটে। আর ব্যয় করে যাচ্ছে অর্থের ওপর অর্থ।

স্থায়ী অভিবাসন প্রত্যাশী আব্দুল জানান, আমি ব্যবসায়িক বিশ্লেষক কোটা থেকে স্থায়ীবাসিন্দার জন্য এক বছর আগে আবেদন জমা দিয়েছিলাম তবে সেই আবেদন এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আসলে করোনার কারণে ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া অনেকটা ঘির গতিতে চলছে। আবার প্রতিটি পেশায় প্রার্থীও বেশি। মূলকথা এখনই স্থায়ী অভিবাসন প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক হয়ে গেছে।

অভিবাসন প্রত্যাশী পর্ণী মল্লিক জানান, আমি গত বছরের অস্থায়ী বাসিন্দার জন্য আবেদন করেছি। যেখানে এই ভিসা পেতে সময় লাগে ৩-৪ মাসে সেখানে এক বছরের বেশি পেরিয়ে গেলেও এখনও কাঙ্খিত ভিসা পাইনি। করোনার কারণে সবকিছুতে পিছিয়ে পড়ছি আমরা।

এসব কারণেই অস্ট্রেলিয়ার পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা কিছুটা দিধার মধ্যে রয়েছে, যে তারা অস্ট্রেলিয়া পড়তে আসবেন কিনা। সেইসঙ্গে অভিবান নিয়ে সুচিন্তায় রয়েছে এই দেশে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে থেকে সমস্যা শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়, আর এই করোনা পরিস্থিতিতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সমস্যা আরো বেড়েছে চলছে। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাই অভিবাসন প্রত্যাশীরা। এমনটাই আশা তাদের।

(এসবি/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test