E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গেরিলা কমান্ডার শহীদুল হক মামা সকলের দোয়াপ্রার্থী

২০১৪ ডিসেম্বর ১৬ ১২:৫২:০৯
গেরিলা কমান্ডার শহীদুল হক মামা সকলের দোয়াপ্রার্থী

মাঈনুল ইসলাম নাসিম : আজ ১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ৪৩ বছর আগে আজকের এই দিনটির পরও যিনি রাজধানীর মিরপুর-মোহাম্মদপুর এরিয়াতে বিহারীদের বিরুদ্ধে সশস্র লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি দুর্ধর্ষ গেরিলা কমান্ডার শহীদুল হক মামা। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সুইডেন প্রবাসী একাত্তরের এই বীর সেনানী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এখন স্টকহল্মে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুই যুগেরও বেশি সময় সুইডেনে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ইউরোপের বাঙালি কমিউনিটির অত্যন্ত সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব শহীদুল হক মামা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সশস্র সংগ্রামে। যুদ্ধের শুরুতে দুই নং সেক্টরে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে বীরত্বের পরিচয় দেন তিনি। সালদা নদীর ভয়ংকর যুদ্ধ শেষ করে হানাদারদের খতম করে ঢাকার উদ্দেশ্যে মার্চ করে আসেন এই অকুতোভয় যোদ্ধা।

শহীদুল হক মামার ভাষায়, সারা বিশ্ব জানে একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল কিন্তু রাজধানীর মিরপুর হানাদার মুক্ত হয়েছিল বাহাত্তরের ৩১শে জানুয়ারি। মিরপুর-মোহাম্মদপুরকে স্বাধীন করতে তখন শহীদুল হক মামার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল দুর্ধর্ষ গেরিলা গ্রুপ ‘মামা বাহিনী’। হানাদার-বিহারীদের আতংক এই ‘মামা বাহিনী’র কমান্ডার শহীদুল হক মামা রায়ের বাজার থেকে উদ্ধার করেছিলেন বাজারের ব্যাগভর্তি মানুষের চোখ।

জীবনের পথচলায় আশির দশকে পাড়ি জমান স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ক্যাপিটাল সুইডেনে। চাটুকারিতা ও তোষামোদীতে যখন চারিদিকে সয়লাব, তখন দূর প্রবাসেও শহীদুল হক মামা বরাবরই ছিলেন স্পষ্টভাষী। সামনাসামনি উচিত কথা বলতে তিনি কতটা পারদর্শী তা জানেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সুনিশ্চিত করতে নিজের পকেটের পয়সায় সুইডেন থেকে তিনি উড়ে গেছেন সুদূর শাহবাগে গনজাগরণ মঞ্চে।

শাহবাগ গনজাগরণ মঞ্চের আলো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তেজস্বী শহীদুল হক মামার বজ্রকন্ঠে। মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়া আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় প্রসিকিউশনের অন্যতম প্রধান স্বাক্ষী ছিলেন তিনি। এজন্য জীবনের চরম ঝুঁকি নিতে হয়েছে শহীদুল হক মামাকে। সত্য কথা বলেন বিধায় কি দেশে কি প্রবাসে অনেকেরই আতংক তিনি। শহীদুল হক মামা প্রায়ই বলে থাকেন, আওয়ামী লীগের ভেতর এখনও লুকিয়ে আছে অনেক মোশতাক-মীর জাফর।

অতি সম্প্রতি স্টকহল্মের একটি হাসপাতালে কিডনিতে জটিল অপরেশন সম্পন্ন হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামার। অনেক বছর ধরেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তিনি। অপারেশন সফল হলেও ডায়াবেটিসের জটিলতায় শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয় শহীদুল হক মামার। দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশ-বিদেশে সবার দোয়া কামনা করেছেন আজীবনের সৎ ও নিরহংকারী এই মানুষটি। দেশপ্রেমিক প্রবাসীদের আক্ষেপ, স্পষ্টবাদী বলেই কি আজো তার ভাগ্যে জোটেনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ?

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test