E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আমেরিকায় জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি গ্রন্থের আলোচনা

২০১৬ মার্চ ২১ ১৫:৪২:২৩
আমেরিকায় জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি গ্রন্থের আলোচনা

হাকিকুল ইসলাম খোকন : ‘একাত্তরের বাংলাদেশের পুনর্জন্ম দানের জন্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত জাহানারা ইমাম কীভাবে কাজ করেছেন, সে সময় তার মনোবল কেমন ছিল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহযোদ্ধাদের ভূমিকা এবং চিকিৎসার জন্যে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ঘনঘন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালিন দিনগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে। সেই অজানা অধ্যায় নতুন প্রজন্মের জানার বিশেষ প্রয়োজন উপলব্ধি করেই এ গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করি’-এসব কথা বলেন লেখক ড. নূরন্নবী ‘আমেরিকায় জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি’ গ্রন্থে।

গ্রন্থটির ওপর আলোচনা উপলক্ষে ১৯ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে জুইস সেন্টার এক সভার আয়োজন করে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৯৬তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটার মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফাহিম রেজা নূর। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি স্বীকৃতি বড়ুয়া। গ্রন্থটির ওপর আলোচনা করেন লেখক-কলামিস্ট বেলাল বেগ এবং হাসান ফেরদৌস ও সাপ্তাহিক বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ।

বেলাল বেগ বলেন, ‘বাংলাদেশকে এখনও একাত্তরের বাংলাদেশ বলা যাবে না। কারণ, এখনও জামায়াতের তৈরি বিএনপি বিদ্যমান রয়েছে। সত্যিকার অর্থে সেটি হচ্ছে ‘ভেজাল বাংলাদেশ।’ জাহানারা ইমাম সেই ভেজাল দূর করার পথ দেখিয়ে গেছেন। সে পথে আমাদের আরো জোরদারভাবে এগুতে হবে।’ ‘বাঙালিকে আবরো জেগে উঠার ক্ষেত্রে জাহানারা ইমামের সাহসী ভ’মিকা অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে এই গ্রন্থে উপস্থাপন করে ড. নবী একটি মৌলিক দায়িত্ব পালন করেছেন’-বলেন বেলাল বেগ।

অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক প্রবাসীর সম্পাদক সৈয়দ মুহম্মদ উল্লাহ শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে বাঙালি জাতির জন্যে ‘ইতিহাসের এক বিশেষ ব্যক্তি’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘তার দৃঢ় মনোবলের কারণে দীর্ঘদিন পর হলেও একাত্তরের ঘাতকদের বিচারে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।’

হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে বাংলাদেশে শুরু হওয়া ঘাতক বিরোধী আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের সম্পৃক্ততার ধারাবিবরণী হিসেবে এই গ্রন্থের ভ’মিকা অপরিসীম।’

জাহানারা ইমামের ছিল না কোন রাজনৈতিক দল বা পুলিশ-প্রশাসন। তবে তার পক্ষে ছিলেন আপামর জনগোষ্ঠি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ভূখন্ডে রাজাকার-কুলঙ্গারদের ঠাঁই হবে না-এটি ছিল তার মন্ত্র এবং এ মন্ত্রে আমরা প্রবাসীরাও জেগে উঠি। আর এভাবেই শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হয়ে উঠেন মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী।’

কৌশিক আহমেদ বলেন, ‘মহীয়সী রমনী জাহানারা ইমাম একদিকে ক্যান্সারের যন্ত্রণায় ছটফট করেন, আবার একইসাথে বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনে সম্পৃক্তদেরকেও দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। এসব অজানা তথ্য প্রকাশ না করলে গৌরবের অনেকখানিই হয়তো অজানা থেকে যেত।’

একাত্তরের কাদেরিয়া বাহিনীর থার্ড ইন কমান্ড, পঁচাত্তর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিজ্ঞানী এবং বর্তমানে নিউজার্সীর প্লেইন্সবরো সিটির কাউন্সিলম্যান ও এই গ্রন্থের লেখক ড. নূরন্নবী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি সাহিত্যিক নই। লেখকও হতে চাই না। এটি লিখেছি দায়বদ্ধতা থেকে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ভূমিকা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন করে জাগ্রত করার ক্ষেত্রে কতটা জরুরী ছিল-তা প্রজন্মকে অবহিত করার তাগিদ থেকেই লিখেছি গ্রন্থটি।’

বইটির দাম ধার্য করা হয়েছে ১০ ডলার। অনুষ্ঠানে আগত অনেকেই বইটি ক্রয় করেন এবং ড. নবীর অটোগ্রাফ নেন। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বইমেলায় ২০১৫ সালে এটি প্রথম প্রকাশ পেলেও এবারের বইমেলায় সংশোধিত কপি প্রকাশ করে সময় প্রকাশন।

(ওএস/এএস/মার্চ ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test